জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রধান ফটক পার হলেই ব্যস্ত সড়ক। পাশেই অবৈধ বাসস্ট্যান্ড। এ সড়কে অবিরাম ছুটছে যানবাহন। অথচ শিক্ষার্থীদের রাস্তা পারাপারে সেখানে নেই নিরাপদব্যবস্থা।
শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হওয়া শিক্ষার্থীরা দফায় দফায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বিষয়টি জানালেও সুরাহা হয়নি। সিটি করপোরেশন ও পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে উদাসীন। ফুট ওভারব্রিজ, জেব্রা ক্রসিং অথবা গতিরোধকের ব্যবস্থা না হওয়ায় নাখোশ তারা।
জগন্নাথ ক্যাম্পাসের ঠিক প্রধান ফটকের সামনে মিলেছে বেশ কয়েকটি রাস্তা। পুরান ঢাকার লক্ষ্মীবাজার, গুলিস্তান, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালসহ শ্যামবাজার ও ইসলামপুরমুখী গাড়ি চলাচল করে এই পথেই। এখানে বাসসহ বিভিন্ন গাড়ির বেপরোয়া গতির কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে দিনের অধিকাংশ সময়ই থাকে যানজট। তখন যানবাহনের গতি কমলেও মিনিবাস, রিকশা ও সিএনজি অটোরিকশার জটলায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায় অনেকটাই।
মূল ফটকের পাশেই ভিক্টর ক্লাসিক, সাভার পরিবহন, তানজিল, বিহঙ্গ, আজমেরী গ্লোরী, সদরঘাটের ৭ নম্বর বাসযাত্রী উঠানো-নামানোর কাজ করে। এতে রাস্তা পারাপারে দুর্ভোগ পোহাতে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের।
শিক্ষার্থী আহনাফ ফাইয়াজ বলেন, ‘সকালে যখন ক্যাম্পাসে আসি, তখন দেখি কারো না কারো গায়ে রিকশার চাকা লাগছেই। প্রধান ফটকের সামনেই চার রাস্তার মোড়। শিক্ষার্থীরা একেকজন একেক দিকে যান। ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকসংলগ্ন সড়কে ন্যূনতম নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই।’
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মালিহা আফরিন বলেন, ‘আবাসিক হল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই ক্যাম্পাসের আশপাশে থাকেন। ঝুঁকি নিয়েই তাদের প্রতিদিন যাতায়াত করতে হয়। ছাত্রীদের রাস্তা পার হতে বেশি সমস্যা হয়।’
পরিসংখ্যান বিভাগের অমিত পাল বলেন, ‘যাতায়াতে এই রাস্তার বিকল্প নেই। এখানে যেকোনো সময়ই শিক্ষার্থীরা দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন।’
গত ১৮ অক্টোবর বাহাদুর শাহ পরিবহনের একটি মিনিবাস রিকশা আরোহী জবির দুই সহকারী প্রক্টরকে ধাক্কা দেয়। এতে দুজনই রাস্তায় পড়ে যান এবং রিকশাচালক গুরুতর আহত হন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সড়কে গতিরোধক বসাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিটি করপোরেশনকে একাধিক চিঠি দেয়া হয়েছে। কাউন্সিলর আব্দুর রহমান মিয়াজির সঙ্গেও কথা বলেছি। কিন্তু এখনও সমাধান হয়নি।
‘ক্যাম্পাসের সামনে বাসস্ট্যান্ডের অনুমতি নেই। সেটা সরানোর জন্যও বলেছি। আশ্বাস দিলেও কেউ ব্যবস্থা নেন না।’
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. আব্দুর রহমান মিয়াজী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ওয়াসার কাজ চলছে, সেটা শেষ হলে আমরা রাস্তায় গতিরোধক বসানোর কাজ শুরু করব।’
বাসস্ট্যান্ডের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাসস্ট্যান্ডের অনুমোদন নেই। রায়সাহেব বাজার মোড় পর্যন্ত ইউটার্নের অনুমোদন আছে শুধু। বাহাদুর শাহ পরিবহন সরানোর জন্য আমি অনেকবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাদের সরানো যায়নি।
‘বাসের ব্যাপারগুলো তো বিআরটিএ দেখে। আর বাসস্ট্যান্ডের বিষয় সিটি করপোরেশনের হলেও আমরা তা সরাতে অনেক চেষ্টা করেও সফলতা পাইনি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের চলাচলের নিরাপত্তায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রক্টরকে বিষয়গুলো নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আলাপ করতে বলব।’