পাবনার সদরের মালিগাছা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মন্তাজ আলীর বিরুদ্ধে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা ও নির্বাচনে কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগ উঠেছে।
তবে পাল্টা অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তার দাবি, নৌকা ও আনারস প্রতীকের প্রার্থী বহিরাগত সন্ত্রাসীদের এনে এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করছেন। নির্বাচনে পরাজয় নিশ্চিত বুঝে তারা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
আগামী ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় মালিগাছা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে লড়ছেন উম্মত আলী, বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে আনারস প্রতীক নিয়ে মাঠে আছেন সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের বহিষ্কৃত সহসভাপতি আরিফুল ইসলাম ও ঘোড়া প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন মুনতাজ আলী।
শেষ মুহূর্তের জমজমাট প্রচারে এখন ব্যস্ত সময় কাটছে প্রার্থীদের।
পাবনা সদর উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম মুন্নুর অভিযোগ, ‘মুনতাজ আলীর ভাতিজা রাকিবুল ওরফে রাব্বি নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের পাবনা আঞ্চলিক কমান্ডার।
‘রাকিবের নেতৃত্বে ২০১৫ সালে জঙ্গিরা ঈশ্বরদীতে ধর্মযাজক লুক সরকারকে বাড়িতে ঢুকে হত্যাচেষ্টা চালায়। তার পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যও জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িত।’
তিনি বলেন, ‘মুনতাজ আলী পোলট্রিশিল্পের ফিড ব্যবসা করেন। অথচ তিনি যেভাবে অর্থ ছড়াচ্ছেন, তা নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।’
আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী উম্মত আলী অভিযোগ করেন, ‘মুনতাজ আলী ‘সৈয়দ ফজলুর রহমান-মমতাজ বেগম-মুনতাজ আলী কল্যাণ ট্রাস্ট’-এর আড়ালে সন্দেহজনক উৎস থেকে কোটি কোটি টাকা এনেছেন। তারা রাতের আঁধারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এবং বিকাশের মাধ্যমেও এসব টাকা বিতরণ করে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছেন। প্রশাসন বিষয়টি তদন্ত করলেই প্রমাণ পাবে।
‘মুনতাজ আলীর পরিবারের বিরুদ্ধে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতার অভিযোগ পুরোনো, এখন নতুন করে কোনো ষড়যন্ত্র করছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা দরকার।’
একই ধরনের অভিযোগ করেছেন আনারস প্রতীকের প্রার্থী আরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমি বিপুল ভোটে জয়লাভ করব। কিন্তু মুনতাজ আলী ও তার লোকজন প্রকাশ্যে ভোট কিনছেন। জঙ্গি হওয়ায় তার দুই ভাতিজা এখনও কারাগারে আছেন।
‘তাদের কাছে বিভিন্ন উৎস থেকে টাকা আসছে। এ ছাড়া নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে নৌকার পক্ষেও বহিরাগত সন্ত্রাসীদের আনাগোনা বেড়েছে। প্রশাসনের কাছে এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই। আমি নির্বাচন কমিশনেও বিষয়টি লিখিতভাবে জানাব।’
তবে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা ও নির্বাচনে টাকা ছড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী মুনতাজ আলী। তিনি বলেন, ‘জনসমর্থন না পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা অসত্য কথা বলছেন। আমার অভিযোগের সপক্ষে তাদের কাছে কোনো তথ্য-প্রমাণ নেই। নৌকা ও আনারস প্রতীকের প্রার্থী বহিরাগত সন্ত্রাসীদের এনে এলাকায় ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করছেন।
তিনি জানান, জঙ্গিবাদে যুক্ত হওয়ায় রাকিবকে তার পরিবারই পুলিশে সোপর্দ করেছিল। তাদের সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।