কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় পোলট্রি ব্যবসায়ী জুয়েলের মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসক ও এক সহকারীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
তাদের প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। এ ছাড়া হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালককেও ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন বিচারক।
কিশোরগঞ্জের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা জজ জান্নাতুল ইবনে হক ১৩ ডিসেম্বর এ রায় দেন, তবে রায়ের ৯ দিন পর বুধবার বিকেলে এটি জানাজানি হয়।
কারাদণ্ড পাওয়া তিনজন হলেন চিকিৎসক কামরুজ্জামান আজাদ ও ইমরান হোসেন এবং তাদের সহকারী গৌরাঙ্গ সাহা। এ ছাড়া ভৈরব ট্রমা অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন ও পরিচালক হিরণ মিয়াকে দিতে হবে জরিমানা। না দিলে ভোগ করতে হবে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড।
রায় ঘোষণার সময় চিকিৎসক কামরুজ্জামান আজাদ ছাড়া সব আসামি উপস্থিত ছিলেন। পরে চিকিৎসক ইমরান ও সহকারী গোরাঙ্গকে কারাগারে পাঠানো হয়। আর চিকিৎসক কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ ও পরিচালক হিরণ আগামী এক মাসের মধ্যে জরিমানার টাকা দেবেন-এমন অঙ্গীকার করে আদালত থেকে ছাড়া পান।
মামলার বাদী কামাল মিয়া নিউজবাংলাকে জানান, রায়ে নিহতের পরিবার সন্তুষ্ট। তারা ন্যায়বিচার পেয়েছেন। জরিমানার টাকা পেলে জুয়েলের স্ত্রীসহ দুই ছেলে-মেয়ে চলতে পারবে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ভৈরবের ব্যবসায়ী ৩৩ বছরের জুয়েল ২০১৯ সালের ৫ জুলাই হাতের সমস্যার চিকিৎসার জন্য ভৈরব ট্রমা অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে যান। সেখানে চিকিৎসক কামরুজ্জামান আজাদ জানান অস্ত্রোপচার করতে হবে।
চিকিৎসক কামরুজ্জামান আজাদ পরে ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে তার অস্ত্রোপচার করেন। অন্যরা ছিলেন তার সহযোগিতা। অস্ত্রোপচারের সময় জুয়েলের এনেসথেসিয়া প্রয়োজন হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ছাড়াই সহকারী গৌরাঙ্গ সাহা তাকে এনেসথেসিয়া দেন। তবে এনেসথেসিয়ার ভুলে জুয়েলের মৃত্যু হয়।
ওই ঘটনার পর জুয়েলের ভগ্নীপতি কামাল মিয়া দণ্ড পাওয়া পাঁচজনকে আসামি করে ভৈরব থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মনির হোসেন তিন মাস পর পাঁচজনের বিরুদ্ধেই আদালতে অভিযোগপত্র দেন।