সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তিতে প্রথম শ্রেণি ছাড়া অন্য শ্রেণিতে ভর্তিতে বয়সের কোনো বাধা নেই। তাই লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের বয়সের অজুহাতে ভর্তি না নেয়ার সুযোগ নেই।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) উপপরিচালক (মাধ্যমিক) মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন বুধবার এ কথা জানিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির বিষয়ে আমাদের একটি নির্দেশনা আছে। নিয়ম অনুযায়ী প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীর বয়স ছয় বছরের বেশি হতে হবে। কিন্তু অন্য কোনো শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের কোনো বাধা নেই।
এদিকে বুধবার জামালপুর জিলা স্কুল ও মানিকগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে বয়সের অজুহাতে ভর্তি না করাতে চাওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে মাউশি উপপরিচালক বলেন, জামালপুরে যে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি ভুল বোঝাবুঝি থেকে হয়েছে।
গত ২১ ডিসেম্বর লটারিতে উত্তীর্ণ হওয়ার পরও বয়সের জটিলতায় জামালপুর জিলা স্কুলে ভর্তি হতে না পারা শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা একটি অনুষ্ঠানস্থলের ফটকে শুয়ে বিভাগীয় কমিশনারের পথ আটকে দেন।
অন্য ঘটনায় মানিকগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে বুধবার সকালের দিকে বয়সের বাধা দেখিয়ে অনেক শিক্ষার্থীকে ভর্তি না নিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হয়। এ নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা রাস্তায় শুয়ে ও দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করেন।
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক পরে জানান, ভুল বোঝাবুঝি থেকে এটা হয়েছিল। তবে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে।
ভর্তির নীতিমালা অনুযায়ী, ২০২২ শিক্ষাবর্ষে সরকারি স্কুলে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিতে শিক্ষার্থীর বয়স ছয় বছরের বেশি হতে হবে। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এর আলোকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় এই বয়স নির্ধারণ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর।
সরকারি স্কুলগুলোর ডিজিটাল লটারির ফল প্রকাশ করা হয় গত ১৫ ডিসেম্বর। এতে নির্বাচিত হয় ৭৫ হাজার ৯৬৯ শিক্ষার্থী। সারা দেশে ৪০৫টি সরকারি স্কুলের ৮০ হাজার ৯১টি শূন্য আসনের বিপরীতে মোট ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৬৬ জন শিক্ষার্থীর আবেদন লটারিতে জমা পড়ে।
এ ছাড়া বেসরকারি স্কুলগুলোর ডিজিটাল লটারির ফল প্রকাশ করা হয় ১৯ ডিসেম্বর। এতে নির্বাচিত হয় ২ লাখ ৭৬ হাজার ৬৪১ শিক্ষার্থী।
সারা দেশে ২ হাজার ৯৬১টি বেসরকারি স্কুলে ৯ লাখ ৪০ হাজার ৮৭৬টি শূন্য আসনের বিপরীতে ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৭০৭ শিক্ষার্থীর আবেদন জমা পড়ে। পছন্দক্রম অনুসারে মোট আবেদন ৭ লাখ ১৪ হাজার ৮২১টি।
করোনা মহামারির কারণে গত বছর প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। এর আগে শুধু প্রথম শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হতো। আর দ্বিতীয় থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তিতে পরীক্ষা নেয়া হতো। নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হতো জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে।