বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ‘কিছু হয়ে যাওয়ার’ আগেই নেতাকর্মীদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এক দোয়া মাহফিল ও আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ন্যাশনালিস্ট এক্স স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (রুনেসা) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রিজভী বলেন, ‘আমরা বলি তার (খালেদা জিয়া) যদি কিছু হয়, তাহলে এই সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে। তার কিছু হওয়া পর্যন্ত কেন আমরা অপেক্ষা করব? তার কিছু হবে কেন? কিছু হওয়ার আগেই এই মুহূর্তেই আমাদের রাস্তায় নামতে হবে।’
রিজভী বলেন, ‘গণতন্ত্রের মা এবং জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রতীক মানুষটি আজ প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে ভয়ংকর পরিস্থিতিতে বন্দিদশায় আছেন। যাদের কোনো ম্যান্ডেট নেই, জনগণের সমর্থন নেই, ভোট-নির্বাচনকে একেবারে নির্বাসনে পাঠিয়ে শুধু প্রতিহিংসা পূরণের জন্য তারা দেশনেত্রীকে বন্দি করে রেখেছে। মানুষ হিসেবে চিকিৎসা পাওয়ার মৌলিক অধিকারটিও এই সরকার হরণ করেছে।’
আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্য হচ্ছে ‘অগণতান্ত্রিকতা’ অভিযোগ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এই পার্থক্য বুঝেই জাতীয়তাবাদী শক্তিকে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে হবে। দেশের মানুষ বাঁচল, কি মরল তা নিয়ে শেখ হাসিনার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। ক্ষমতার জন্য এমন কোনো কাজ নেই, যা আওয়ামী লীগ করতে পারে না।’
র্যাবের কয়েক কর্মকর্তার ওপর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘এর পরেও তাদের কি কোনো বোধোদয় হয়েছে? তারা ওই একই কাজ করেই যাচ্ছে। গতকাল গভীর রাতে মুন্সিগঞ্জ ছাত্রদলের এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদককে র্যাব পরিচয়ে তুলে নিয়ে গিয়েছে। গুম হচ্ছে আওয়ামী লীগের বৈশিষ্ট্য, ভালো কোনো বৈশিষ্ট্য নেই তাদের।’
আলোচনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘আন্দোলনের কৌশল পরিবর্তন করতে হবে। এই স্বৈরাচারী সরকার এখন ফ্যাসিবাদী সরকারে পরিণত হয়েছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন, আর স্বৈরাচারীর বিরুদ্ধে আন্দোলনের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য আছে। এই মৌলিক পার্থক্য অনুধাবন করে রাজনৈতিক কর্মসূচি দিতে না পারলে আমরা সফলতা অর্জন করতে পারব না।’
বিএনপির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘ইউনিভার্সিটিগুলো কোনো সমাবেশ অনুষ্ঠানে আমাদের আর ডাকে না। কারণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন আর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই। গণতন্ত্র দেশ থেকে উঠে গেছে। ইউনিভার্সিটিগুলোতে আমাদের দলের কমিটি থাকলে কি হবে, তারা আজ কথা বলার অধিকার হারিয়ে ফেলেছে।’
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, রুনেসার সভাপতি বাহাউদ্দিন বাহার, সাধারণ সম্পাদক মল্লিক মো. মোকাম্মেল কবীর প্রমুখ।