রাজশাহী নগরের টুলটুলিপাড়া এলাকার বাসিন্দা মিজানুর রহমান। তিনি মানুষের কাছ থেকে ধার করে প্রায় ৩১ লাখ টাকা অনলাইনের মাধ্যমে একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেছিলেন। কিন্তু পুরো টাকাই তারা খোয়া যায়।
ঋণের টাকা শোধ দেয়ার কোনো রাস্তা না পেয়ে অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলেন মিজানুর। তবে সেখানেও ধরা খেয়েছেন। এবার তিনি ধরা পড়েছেন পুলিশের হাতে।
মিজানুরের গ্রামের বাড়ি গোদাগাড়ী উপজেলার কাজীহাটা এলাকায়। তিনি অপহৃত হয়েছেন এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মঙ্গলবার রাজধানীর গাবতলী থেকে মিজানুরকে ধরে ফেলে।
নগর ডিবি পুলিশের কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে এ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে নগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার আরেফিন জুয়েল জানান, মিজানুর ২০১৪ সাল থেকে ‘ফরেক্স ফ্যাক্টরি’ নামের একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানে অনলাইনের মাধ্যমে বিনিয়োগ করেন।
প্রথম দিকে ভালো লাভ করলেও ধীরে ধীরে তার লোকসান হতে থাকে। তিনি বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ধার করে ৩১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। একপর্যায়ে সব টাকাই তার খোয়া যায়।
এই ঋণ পরিশোধের কোনো পথ না পেয়ে তিনি নিজেই অপহরণের নাটক সাজান। ১৩ ডিসেম্বর তিনি আত্মগোপন করেন।
তারপর বাড়িতে ফোন করে জানান, তাকে অপহরণ করা হয়েছে। ২০ লাখ টাকা না দিলে তাকে মেরে ফেলা হবে। পরে ১০ লাখ এবং সবশেষ ৫ লাখ টাকা দাবি করেন।
তবে টাকা না দিয়ে মিজানুরের মা মনিরা বেগম ওই দিনই নগরের কাশিয়াডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এই জিডির পরিপ্রেক্ষিতে নগর গোয়েন্দা পুলিশ মিজানুরের অবস্থান শনাক্ত করতে কাজ শুরু করে।
আরেফিন জুয়েল জানান, মিজানুর দফায় দফায় নিজের অবস্থান বদলাতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত গাবতলী থেকে মঙ্গলবার তাকে আটক করা সম্ভব হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মিজানুর সাংবাদিকদের জানান, ‘আমার একটা ভুলের কারণে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ঋণ হয়ে গেছে। এ জন্য আমাকে এই কৌশল নিতে হয়েছিল। ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য আমি নিজেই অপহরণের নাটক সাজিয়েছিলাম।’
কাশিয়াডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এস এম মাসুদ পারভেজ জানান, এ ব্যাপারে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।