তৃতীয় বারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ সিটি কপোরেশনের নির্বাচন। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হলেও এই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন তৈমূর আলম খন্দকার। তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দুই বারের মেয়র আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াৎ আইভী।
তৈমূর আগে বিএনপির ব্যানারে সিটি নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত থাকেননি, সরে দাঁড়ান ভোটের আগের দিন। এক দশক পর অনেক পরিকল্পনা নিয়ে হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী। বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতার দাবি, এবার জনগণের রায়ে প্রার্থী হয়েছেন আর এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীর মৌসুম।
নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন উপলক্ষে তৈমূর আলম খন্দকারের পরিকল্পনা নিয়ে তার একান্ত সাক্ষাৎকার নিয়েছে নিউজবাংলা।
নিউজবাংলা: নারায়ণগঞ্জ নগরী নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
তৈমূর: একটা সিটি যদি এলোমেলোভাবে গড়ে উঠে তাহলে আবার সেটা ভাঙতে হয়। আমি যদি নির্বাচিত হই তাহলে ১০০ বছরকে সামনে রেখে একটা মূল পরিকল্পনা করব। সেখানে প্রথম একটা খসড়া মাস্টার পরিকল্পনা করে তা জনগণের কাছে ছাপিয়ে দেব। তাদের বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দেব, যারা কর প্রদান করেন তাদের পাশাপাশি নগরীর পেশাজীবীদের নিয়ে খসড়া পরিকল্পনাটি চূড়ান্ত করব এবং সরকারকে উন্নয়নের জন্য ভর্তুকি দিতে বাধ্য করব।
নিউজবাংলা: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে ভোটের আগের দিন সরে গেলেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনের প্রার্থী হলেন না, তাহলে এবার কেন স্বতন্ত্র প্রার্থী থেকে নির্বাচন করছেন?
তৈমূর: প্রথমবার আমি একটা দলের নিয়ন্ত্রণে ছিলাম। দল নির্দেশ করেছিল, তাই আমি বসে গিয়েছিলাম। কারণ আমি সুবিধা নেয়া নেতা না, আমি বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হয়ে দলটা করি। দল আমার রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। ২০১৬ সালে দল বলেছিল, কিন্তু আমি প্রার্থী হইনি। তবে এবার তো এখানে দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেই, এবার জনগণের সিদ্ধান্ত। প্রতিটি জিনিসের মৌসুম থাকে, এবার হলো স্বতন্ত্রের মৌসুম।
নিউজবাংলা: গতবারের মতো এবারও যদি এমপি শামীম ওসমান আইভীর পক্ষে থাকে?
তৈমূর: এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ কারণে আমি তাদের বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে আমি কারো ওপর ভরসা করে নির্বাচনে দাঁড়াই নাই। আল্লাহ মালিক আর জনগণের ওপর ভরসা করে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি।
নিউজবাংলা: নির্বাচনে আপনার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সেলিনা হায়াৎ আইভীকে হারিয়ে আপনি জয়ী হতে পারবেন?
তৈমূর: আল্লাহর রহমতে নির্বাচনের জয়ের আগে যে পরিস্থিতি দেখা যায় তা এখনই দেখা যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে সাবেক এমপি থেকে শুরু করে নাগরিক ও সুশীলসমাজের নেতারা আমাকে সমর্থন জানিয়েছেন। কারণ তারাও চান পরিবর্তন।
নিউজবাংলা: আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ের নেতারা থাকবেন, সে ক্ষেত্রে আপনার কোনো সমস্যা হবে কি?
তৈমূর: নারায়ণগঞ্জের জনগণ অনেক সচেতন জনগণ। এই নারায়ণগঞ্জ অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের সূতিকাগার। সুতরাং নারায়ণগঞ্জে বাইরে থ্যাইকা সরকারি প্রভাব কোনো কাজে আসবে না।
২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান ছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার। ২০০৯ সালে তাকে জেলা বিএনপির সভাপতি করা হয়।
এরপর ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কপোরেশনের সেই নির্বাচনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ শামীম ওসমান বা সেলিনা হায়াৎ আইভী কাউকে সমর্থন না দিলেও বিএনপির সমর্থনে ভোটে ছিলেন তৈমূর আলম খন্দকার। তবে ভোটের আগের দিন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান তিনি। তৈমূর বর্তমানে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাসহ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন।