কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে তৃতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে নৌকার প্রার্থীকে হারানোর অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন মথুরাপুর ইউনিয়নের নৌকার দলীয় প্রার্থী ও উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি হাশিম উদ্দিন হাসু।
১৯ ডিসেম্বর করা আবেদনের খবর জানাজানি হলে দলীয় নেতা-কর্মী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
এর আগে ফিলিপনগর ইউপিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী অভিযোগ করেন, তাকে পরাজিত করতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা ও ফ্ল্যাট নিয়েছেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের এমপি আ কা ম সরওয়ার জাহান।
লিখিত অভিযোগে হাশিম উদ্দিন হাসু, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী এজাজ আহমেদ মামুন, সহসভাপতি ও স্থানীয় এমপির প্রতিনিধি টিপু নেওয়াজ, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাকিব আহমেদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সরদার তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাকে হারানোর অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী বলেন, ‘এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। দলীয় সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হবে। প্রমাণ পেলে, সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলায় একযুগ ধরে জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীরাই জয়লাভ করে আসছেন। কিন্তু ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। অনেক আসনে নৌকা প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়।
উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের ১০টিতেই নৌকা প্রার্থীরা পরাজিত হন। ভরাডুবির কারণ হিসেবে স্থানীয় এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানসহ শীর্ষস্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে দলের বিদ্রোহীদের কাছ থেকে অর্থ গ্রহণের অভিযোগ তোলেন পরাজিত নৌকা প্রার্থী ও সমর্থকরা।
মথুরাপুর ইউপিতে পরাজিত নৌকা প্রার্থী হাশিম উদ্দিন হাসু জানান, আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় ওই নেতারা বিদ্রোহী প্রার্থীর কাছ থেকে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্রকাশ্যে তাদের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় তিনি পরাজিত হয়েছেন।
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এজাজ আহম্মেদ মামুনসহ অভিযুক্তদের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে কেউই কথা বলতে রাজি হননি।
তবে দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফ উদ্দিন রিমন নৌকা প্রার্থী হাশিম উদ্দিন হাসুর অভিযোগ স্বীকার করে বলেন, ‘অবশ্যই এমনটি হয়েছে। যেখানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বসবাস, সেখানে নৌকার মনোনীত প্রার্থী পরাজিত হওয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিষয়টি জেলা আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হয়েছে। তারা বিষয়টি দেখছেন।’