সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম ও তার সর্বকনিষ্ঠ স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া বিনত আল-হুসেইনের বিবাহবিচ্ছেদ চূড়ান্ত। এ জন্য প্রিন্সেস হায়া সব মিলিয়ে ৫০ কোটি পাউন্ডের ( ৫ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা) সমপরিমাণ অর্থ পাবেন।
বিবাহবিচ্ছেদ চূড়ান্ত করে যুক্তরাজ্যের হাইকোর্ট মঙ্গলবার এ রায় দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের আইনি জগতের ইতিহাসে একে বলা হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিয়েবিচ্ছেদের মামলা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪৭ বছরের প্রিন্সেস হায়া জর্ডানের সাবেক বাদশাহ হুসেইন বিন-তালালের মেয়ে। ৭২ বছরের ধনকুবের রশিদ আল-মাখতুমের ছয় স্ত্রীর মধ্যে তিনি কনিষ্ঠতম। দুই সন্তান নিয়ে ২০১৯ সালে দুবাই ছেড়ে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান প্রিন্সেস হায়া। তিনি এখন যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সুরিতে একটি বিলাসবহুল বাড়িতে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করছেন।
যুক্তরাজ্যের হাইকোর্ট জানিয়েছে, বিয়েবিচ্ছেদের জন্য প্রিন্সেস হায়াকে ২৫ কোটি ১৫ লাখ পাউন্ড দিতে হবে দুবাই শাসককে। এ ছাড়া লন্ডনে ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কেনসিংটন প্রাসাদের পাশের একটি বিলাসবহুল বাড়ি ও সুরির বাড়িটির নিয়ন্ত্রণ থাকবে হায়ার হাতে।
আদালত রায় দিয়েছে, দুবাইয়ের এই শাসকের ঘরে প্রিন্সেস হায়ার দুই সন্তানের প্রত্যেককে প্রতি বছর ৫৬ লাখ পাউন্ড দিতে হবে এবং তা ২৯ কোটি পাউন্ডের একটি গ্যারান্টি দিয়ে সুরক্ষিত করা থাকবে।
তাদের দুই সন্তানের মধ্যে মেয়ের বয়স ১৪ বছর ও ছেলের বয়স ৯ বছর।
এ ছাড়া রায়ে প্রিন্সেসের নিরাপত্তার ব্যয়, ছুটি কাটানোর খরচ, একজন নার্স ও আয়ার বেতন, আবাসনের খরচ, পরিবারের জন্য বুলেটপ্রুফ গাড়ি এবং তার পালিত ঘোড়া ও অন্যান্য প্রাণীর খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
প্রিন্সেস হায়া বিনত আল-হুসেইন
প্রিন্সেস হায়া তার এক ব্রিটিশ দেহরক্ষী সাবেক সেনার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন বলে জানার পর শেখ মোহাম্মদ ‘তুমি বেঁচে ছিলে, তুমি মরে গেছো’ নামে একটি কবিতা প্রকাশ করেন, যাতে তাকে হুমকি দেয়া হয় বলে অভিযোগ করা হয়।
জীবন সংশয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রিন্সেস হায়া সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ভিন্নমতের কারণে রশিদ আল-মাখতুম তার দুই মেয়ে শেখ লতিফা ও শেখ শামসাকে জোরপূর্বক আটকে রেখেছেন। বিয়েবিচ্ছেদের পর তার ভাগ্যেও এমন কিছু ঘটতে পারে। এমনকি দুবাই ছাড়ার পরও তাকে এবং তার সন্তানদের অপহরণের হুমকি দিয়েছেন রশিদ আল-মাখতুম।
শেখ মোহাম্মদ শুধু দুবাইয়ের ধনাঢ্য শাসক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি ঘোড়দৌড়ের জগতেও রেসের ঘোড়ার একজন প্রভাবশালী মালিক।