দলে ভুঁইফোঁড় অনুপ্রবেশকারীরা রামরাজত্ব করছে বলে মন্তব্য করছেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। বরগুনার টাউনহল মাঠে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই মন্তব্য করেন তিনি।
পরশ বলেন, ‘কিছু অসাধু নেতার ব্যক্তিস্বার্থে দলে অনুপ্রবেশকারীরা জায়গা পাচ্ছেন। এতে দুঃসময়ের পরীক্ষিত নেতা-কর্মীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। এটা সংগঠনের জন্য ক্ষতিকর। এর মধ্য দিয়ে বিএনপি, জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা পুনর্বাসিত হচ্ছেন। তারা দলের চরম ক্ষতি করছেন।
‘বঞ্চিত নেতা-কর্মীরা দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কেউ দুঃখে ঘরে বন্দি হয়ে আছেন। তাদের দীর্ঘশ্বাস আমাদের ধ্বংস ডেকে আনবে।’
তিনি বলেন, অনুপ্রবেশকারীরা বন্ধুবেশে দলে প্রবেশ করে আমাদের মধ্যে বিচরণ করছেন। আমাদের প্রাণের সংগঠনের প্রতি তাদের দরদ নেই। তারা এসেছেন অতীত অপকর্ম ঢাকতে। স্বার্থ হাসিল হলে তারা আমাদের আর চিনবে না।’
অনুপ্রবেশকারীদের সম্পর্কে দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে যুবলীগ চেয়রাম্যান বলেন, ‘নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ত্যাগী সাংগঠনিক অভিজ্ঞতাসম্পন্নদের নির্বাচন করবেন। যারা দলের দুঃসময়ে সংগ্রাম করেছেন, জেল খেটেছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। বিগত কর্মকাণ্ড, কার্যকলাপ ও অবদান আমলে নিতে হবে।’
পদসর্বস্ব রাজনীতিতে যুবলীগ বিশ্বাস করে না জানিয়ে পরশ বলেন, ‘আমার বাবা শেখ ফজলুল হক মনি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে অনেক স্বপ্ন নিয়ে এ সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন ন্যায় ও সমতার ভিত্তিতে সমাজব্যবস্থা গঠন করতে। যেখানে যুবসমাজ একাধারে কারিগর হিসেবে ভূমিকা রাখবে, কাজ করবে সমাজব্যবস্থার রক্ষক হিসেবে।’
বক্তৃতা শেষে যুবলীগ চেয়ারম্যান জেলা যুবলীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
বরগুনা জেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি কামরুল আহসান মহারাজের সভাপতিত্বে সকাল ১০টায় আওয়ামী যুবলীগ বরগুনা জেলা শাখা আয়োজিত সম্মেলন শুরু হয়। অতিথি বরণের পর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান নেতা-কর্মীরা।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা সবুর, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ জাহাঙ্গীর কবীর। আরও ছিলেন কেন্দ্রীয় যুবলীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার, মজিবুর রহমান চৌধুরি নিক্সন, বরিশাল বিভাগীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ বদিউল আলম, কাজী মাজহারুল ইসলামসহ যুবলীগের কেন্দ্র, জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।
১৫ বছর পর মঙ্গলবার বরগুনা জেলা যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজন ঘিরে বরগুনা শহরকে সাজানো হয় বর্ণিল সাজে।