শিশুর জন্মনিবন্ধন সনদ জালিয়াতির মামলায় সাজা পেয়েছেন ঢাকার এক দম্পতি।
ঢাকার মহানগর হাকিম তামান্না ফারাহ মঙ্গলবার আসামিদের ৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
সাজা পাওয়া আসামিরা হলেন- অনামিকা ওমর ও তার দ্বিতীয় স্বামী আরশাদ হোসেন। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা অর্থদণ্ডের ১০ হাজার টাকা আদালতে জমা দেন।
আদালতের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউর আজাদ রহমান বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামি অনামিকা ওমর চকবাজারের বাসিন্দা। আরশাদ হোসেনের বাড়ি বকশিবাজার লেনে। ২০০৮ সালের ৩ জানুয়ারি অনামিকার বিয়ে হয় মাকসুদুর রহমান নামে ব্যক্তির সঙ্গে। ২০১০ সালের ১৬ এপ্রিল এ দম্পতির কন্যাসন্তানের জন্ম হয়।
মামলার বাদী মাকসুদুর এজাহারে জানান, অনামিকা একপর্যায়ে আরশাদ হোসেন নামে ব্যক্তির সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। পরে তিনি মাকসুদকে তালাক দিয়ে আরশাদকে বিয়ে করেন। দ্বিতীয় বিয়ের পর অনামিকা কন্যার নাম, জন্মতারিখ ও পিতার নাম পরিবর্তন করেন। জালিয়াতির মাধ্যমে অনামিকা ও আরশাদ শিশুর নতুন জন্মনিবন্ধন করেন।
এদিকে মাকসুদ সন্তানের ভরণপোষণের টাকা পরিশোধ করলেও মেয়েকে দেখার সুযোগ পাচ্ছিলেন না। এ অবস্থায় তিনি কুমিল্লার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। তখন তার কন্যাকে মাসে একবার দেখার আদেশ পান। কিন্তু আসামিরা মেয়েকে দেখা করতে দেননি।
এমনকি ২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর মাকসুদ আদালতের আদেশ নিয়ে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে সেন্টার পয়েন্ট স্কুলে গেলে সেখানে কন্যাকে পাননি। স্কুলটিতে ওই নামের শিক্ষার্থী নেই বলে তিনি জানতে পারেন। পরে স্কুলগেটে অনামিকা ও আরশাদকে দেখতে পান। তারা মাকসুদকে লাঞ্ছিত করেন।
সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে কন্যার পরিচয় বদলে ফেলা হয়েছে জেনে মাকসুদুর রহমান ২০১৭ সালে আদালতে মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে চকবাজার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দেলোয়ার হোসেন তদন্ত করে গত বছর দুই আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট দেন। সাক্ষ্য-শুনানি শেষে আদালত মঙ্গলবার মামলার রায় দেয়।