বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আট মাসে সর্বনিম্ন লেনদেন

  •    
  • ২১ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৫:২২

সূচক বাড়লেও মঙ্গলবার ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন দেখেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এর আগের গত ১৮ এপ্রিল পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছিল ৬০২ কোটি টাকা। তারপর ১৯ এপ্রিল লেনদেন হয়েছিল ৬৯৭ কোটি টাকা। এরপর আর পুঁজিবাজারের লেনদেন ৬ হাজারে নেমেনি।

আস্থা জাগানোর যত উদ্যোগই নেয়া হচ্ছে কোনোটিতেই কাজ হচ্ছে না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ থেকে সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কাছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণে ৬টি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তাতে প্রত্যাশা ছিল সূচক বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনেও গতি ফিরবে, কিন্তু তাতেও আস্থা ফেরেনি।

সূচক বাড়লেও মঙ্গলবার ৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন দেখেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এর আগের গত ১৮ এপ্রিল পুঁজিবাজারে লেনদেন হয়েছিল ৬০২ কোটি টাকা। তারপর ১৯ এপ্রিল লেনদেন হয়েছিল ৬৯৭ কোটি টাকা। এরপর আর পুঁজিবাজারের লেনদেন ৬ হাজারে নেমেনি।

পুঁজিবাজার বিশ্লেষক দেবব্রত কুমার সরকার নিউজবাংলাকে জানান, এপ্রিলের শেষ সময় থেকে নভেম্বরের শেষ সময় পর্যন্ত পুঁজিবাজারে যে লেনদেন হয়েছে তাতে সূচক কমে গেলেও আতঙ্কের কিছু ছিল বলে মনে হয়নি।

তিনি বলেন, এখন যেহেতু সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমে আসছে তাতে বলা যায়, কোনো পক্ষ শেয়ার বিক্রি করছে, কিন্তু নতুন বিনিয়োগ করছে না। এ বিষয়টি নজরদারি করা উচিত। পুঁজিবাজারে এমন অবস্থা আগেও হয়েছে। বর্তমান কমিশনের ওপর বিনিয়োগকারীদের অনেক আস্থা আছে। সেই আস্থার জায়গা থেকেই বিনিয়োগকারীরা করোনা মহামারির সময়ও বড় বিনিয়োগের মাধ্যমে পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা রেখেছে।

সবকিছু স্বাভাবিক হওয়ার পর কেন পুঁজিবাজারের এমন অবস্থা হচ্ছে সেটির সঠিক যাচাই-বাছাই প্রয়োজন বলে মনে করেন দেবব্রত কুমার।

তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে পুঁজিবাজারে নজরদারি করা হচ্ছে, এটি ভালো দিক। আগে পুঁজিবাজার নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা হলেও এভাবে চিঠি দিয়ে নির্দেশনা প্রদান বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সহায়ক হবে।

ডিএসইতে লেনদেনের সবশেষ চিত্র

মঙ্গলবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২০ দশমিক ৭০ পয়েন্ট বেড়েছে। সূচক দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৭৫৭ দশমিক ২৫ পয়েন্টে। পাশাপাশি অপর দুই সূচকও বেড়েছে।

তবে আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে এসেছে লেনদেন, ৬৫২ কোটি টাকা। আগের দিনও লেনদেন হয়েছিল ৮০৭ কোটি টাকা। এক দিনের ব্যবধানে সূচক কমেছে ১৫৫ কোটি টাকা।

লেনদেনে বস্ত্র খাতের শেয়ারের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা গেছে। পাশাপাশি প্রকৌশল, বিবিধি, ব্যাংক খাতের প্রতি আগ্রহ ছিল বিনিয়োগকারীদের।

এদিন ডিএসই এসএমই বোর্ডের সূচক ডিএসএমইএক্স ২৩ দশমিক ৫১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৫৯০ দশমিক ৬০ পয়েন্টে। তালিকাভুক্ত ছয়টি কোম্পানির মধ্যে চারটির দর কমেছে। দুটির দর বেড়েছে। মোট লেনদেন হয়েছে ৯ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

যেসব কোম্পানির দর বদ্ধিতে বেড়েছে সূচক

মঙ্গলবার পুঁজিবাজারে সূচক বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বেশি সহায়ক ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ২.১০ শতাংশ। এতে সূচক বেড়েছে ৫.৮৪ শতাংশ। লেনদেনে কোম্পানিটির শেয়ার দর ১৫২ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫৫ টাকা ২০ পয়সা।

ব্যাংক খাতের আইএফআইসি ব্যাংকের শেয়ার দর ৪.৮৫ শতাংশ বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ২.৮৩ শতাংশ। ব্যাংকটির শেয়ার দর ১৬ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৭ টাকা ৩০ পয়সা। ব্র্যাক ব্যাংকের শেয়ার দর বেড়েছে ১.৫১ শতাংশ। এতে সূচক বেড়েছে ২.৩২ শতাংশ।

সূচক বৃদ্ধিতে সহায়ক ছিল বেক্সিমকোফার্মা, যার শেয়ার দর বেড়েছে দশমিক ৮২ শতাংশ। এতে সূচক বেড়েছে ১.৪৯ শতাংশ।

ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির শেয়ার দর এদিন বেড়েছে দশমিক ৪৮ শতাংশ। ২৪৬ টাকা ৮০ পয়সা দরের শেয়ার হয়েছে ২৪৮ টাকা। এদিন কোম্পানিটির ৯৮ লাখ টাকার ৩৬ হাজার ৬৫৫টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের ব্রিটিশ আমেরিকান ট্যোবাকো (বিএটিবিসি) শেয়ার দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ১.২৪ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে দশমিক ১৭ শতাংশ।

লাফার্জ হোলসীম বাংলাদেশের শেয়ার দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে দশমিক ৯৭ শতাংশ। যমুনা ব্যাংকের শেয়ার দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে দশমিক ৯৪ শতাংশ। আর এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে দশমিক ৮২ শতাংশ।

লেনদেনে এগিয়ে থাকা ১০ কোম্পানি

লেনদেন এগিয়ে থাকা ১০ কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। গত ১০ কর্মদিবসে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে চারদিন। বাকি ছয় দিন থেমে থেমে শেয়ার দর কমেছে।

মঙ্গলবার বেক্সিমকো লিমিটেডের ১০২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। ৬৬ রাখ ৬২ হাজার ৮৯২টি শেয়ার এদিন হাতবদল হয়েছে।

লেনদেনে এগিয়ে থাকা দশ কোম্পানির মধ্যে এদিন ব্যাংক খাতের ছিল ‍দুটি। এর মধ্যে ওয়ান ব্যাংকের শেয়ার দর সোমবার বেড়েছিল। তার আগে টানা সাত দিন কমেছে।

মঙ্গলবার আবারও দশমিক এক শতাংশ কমেছে ব্যাংকটির শেয়ার দর। মোট লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এদিন ব্যাংকটির ১ কোটি ৮৪ লাখ ৯৬ হাজার ৯৭২টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

ব্যাংক খাতের আইএফআইসি ব্যাংকের মোট ১৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। হাতবদল হয়েছে ৮১ লাখ ২০ হাজার ৪২৫টি শেয়ার।

এছাড়া ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৪০ হাজার ১৭৯টি শেয়ার।

জিএসপি ফিন্যান্সের লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৪৯ লাখ ১৭ হাজার ৯৮০টি শেয়ার।

সাইফ পাওয়ারের লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। শেয়ার হাতবদল হয়েছে ২৯ লাখ ৪ হাজার ৪৮টি শেয়ার।

এ তালিকায় ছিল বেক্সিমকো ফার্মা, যার ১১ কোটি ২৯ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। সোনালী পেপারের ১০ কোটি ৭০ লাখ টাকা লেনদেন হয়েছে। এছাড়া, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স, ফার্মা এইড ছিল সেরা দশে।

দর বেড়েছে যে ১০ কোম্পানি

দিনের সর্বোচ্চ ৯ শতাংশের বেশি বা ১০ শতাংশের কাছাকাছি দর বেড়েছে এমন কোম্পানি ছিল দুটি। এর মধ্যে একটি ছিল জেড ক্যাটাগরির তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল। গত ১০ কর্মদিবেস কোম্পানিটির টানা চার কর্মদিবস দর কমেছে। সোমবার ও মঙ্গলবারসহ বাকি চারদিনও দর বেড়েছে কোম্পানিটির।

এদিন তমিজউদ্দিন টেক্সটাইলের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৯৫ শতাংশ। ১৪৭ টাকা ৬০ পয়সা দরের শেয়ার হয়েছে ১৬২ টাকা ৩০ পয়সা।

‘বি’ ক্যাটাগরির কোম্পানি ফাইন ফুডসের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৯১ শতাংশ। ৪৫ টাকা ৪০ পয়সা দরের শেয়ার হয়েছে ৪৯ টাকা ৯০ পয়সা।

এ ছাড়া, দর বৃদ্ধির তালিকায় থাকা সোনালী পেপারের শেয়ার দর বেড়েছে ৮.৭৩ শতাংশ। হাক্কানি পাল্পের শেয়ার দর বেড়েছে ৭.১৪ শতাংশ।

এদিন দর বৃদ্ধির দশ কোম্পানির মধ্যে খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের কোম্পানি ছিল ৫টি। ফাইন ফুড সহ জিলবাংলা সুগার, যার শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৮৮ শতাংশ। এএমসিএল (প্রাণ), যার শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৮০ শতাংশ। এমারেল্ড অয়েলের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৫২ শতাংশ এবং ন্যাশনাল টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৪৮ শতাংশ।

এছাড়া মুন্নু এএমজিএলর শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৫৭ শতাংশ। এতে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫৭০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬০৭ টাকা ৫০ পয়সা।

দর বৃদ্ধির তালিকায় থাকা দেশ গার্মেন্টের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৯১ শতাংশ। এপেক্স ফুডের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.৩৫ শতাংশ।

দর পতনের ১০ কোম্পানি

এদিন সবচেয়ে বেশি শেয়ার দর কমেছে হাওয়েল টেক্সটাইলের ৮.৪৬ শতাংশ। এতে ৪৪ টাকা ৯০ পয়সা দরের শেয়ার কমে হয়েছে ৪১ টাকা ১০ পয়সা। ৬ লাখ ৮০ টাকা টাকার মোট ১৬ হাজার ৩৯টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

এছাড়া বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সে কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে ৫.৬৫ শতাংশ। ৪০ লাখ ৩৬ হাজার টাকার মোট ৩১ হাজার ৪৬৩টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

সোনালী পেপার কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে ৪.৯৯ শতাংশ। এশিয়া ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৪.৬৭ শতাংশ। সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৪.৬৫ শতাংশ।

এদিন দর পতনের থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সিলকো ফার্মার শেয়ার দর কমেছে ৩.৮৪ শতাংশ। পিপলস ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৩.৭৫ শতাংশ। এটলাস বাংলাদেশের শেয়ার দর কমেছে ৩.২২ শতাংশ। আরএসআরএম কোম্পানির শেয়ার দর ২২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৩.১১ শতাংশ কমে হয়েছে ২১ টাকা ৮০ পয়সা।

প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ৩ শতাংশ। এদিন কোম্পানিটির ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার ২ লাখ ১ হাজার ২০৩টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

দর পতনে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে জনতা ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে ২.৯৩ শতাংশ। মেঘনা পেট কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে ২.৮৯ শতাংশ। অনালিমা ইয়ার্ডের শেয়ার দর কমেছে ২.৮৫ শতাংশ।

এ বিভাগের আরো খবর