নোয়াখালী সদর উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আমির হোসেন বাহাদুরের কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে ভোটার এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনকে হুমকি-ধমকি দেয়ার অভিযোগ ওঠেছে।
সোমবার বিকালে উপজেলার নেয়াজপুর ইউনিয়নের ডিস লাইন নামক স্থানে আনারস প্রতীকের নির্বাচনী অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ তোলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল হুদা পাটোয়ারী দিপু।
তবে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পাল্টা অভিযোগ এনে বলেছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজনই তার ওপর হামলা চালিয়েছে।
আনারস প্রতীকের প্রার্থী নুরুল হুদা পাটোয়ারী দিপু বলেন, ‘নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর গত ৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় নৌকার প্রার্থী আমির হোসেন বাহাদুরের লোকজন ইউনিয়নের ডিস লাইন এলাকায় আমার নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
‘বিষয়টি আমি উপজেলা রিটার্নিং অফিসারকে জানানোর ৪৪ ঘণ্টা পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসে আমার কার্যালয়ের তালা খুলে দেয়। এরপর থেকে বাহাদুর বহিরাগত সন্ত্রাসীদের এনে আমি এবং আমার কর্মী-সমর্থকদের হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘গত ১৭ ডিসেম্বর রাত ৮টার দিকে আমির হোসেন বাহাদুর নিজে এসে আমার একই অফিসে ঢুকে ভাঙচুর চালিয়ে আনারস প্রতীকের লোকজনকে মারধর করে। পরের দিন বিকালে এর প্রতিবাদে আমার লোকজন বিক্ষোভ মিছিল বের করলে নৌকার প্রার্থীর ভাই ইসমাইল হোসেন রাকিবের নেতৃত্বে একদল হেমলেট সন্ত্রাসী প্রকাশ্যে অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে আমার লোকদের ওপর হামলা চালায় এবং ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। ঘটনার পর প্রার্থীর ভাই রাকিবের নেতৃত্বে হেমলেট সন্ত্রাসীরা ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র মহড়া দিয়ে আতঙ্ক তৈরি করছে।
‘আমি ও আমার লোকজন প্রচারণায় বের হতে পারছি না। আমরা যেখানেই যাচ্ছি তারা সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। এতে করে আমি এবং আমার কর্মী-সমর্থকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি।’
স্বতন্ত্র প্রার্থীর অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আমির হোসেন বাহাদুর বলেন, ‘গত পরশুদিন রাতে আমি যখন আমার প্রচারণা কার্যক্রমে দেবীপুর যাওয়ার পথে দিপুর লোকজন আমার ওপর হামলা চালিয়েছে। যে প্রার্থী আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, তিনি একজন জনবিচ্ছিন্ন প্রার্থী। তিনি এখনও কোনো এলাকায় ভোট চাওয়ার জন্য যেতে পারেননি। শুধু মাত্র ডিস লাইন এলাকায় বসে বসে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।’
অস্ত্র মহড়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমার ছোট ভাই রাকিব নির্বাচনী প্রচারণায় গেলে দিপুর সন্ত্রাসীরা তাকে অস্ত্র নিয়ে ঘিরে ধরে। সেখানে ছবি তুলে তারা অপপ্রচার করছে। আমি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। কারণ, জনগণ আমাদের সঙ্গে আছে, জনগণের ভোটে নৌকা প্রতীকের বিজয় সুনিশ্চিত হবে।’
রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ জুলকার নাঈম বলেন, ‘নেয়াজপুরে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’