বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ (এসইউবি)-এর উদ্যোগে আলোচনা সভা হয়েছে।
রাজধানীর সাতমসজিদ সড়কে এসইউবির প্রধান ক্যাম্পাসের সম্মেলনকক্ষে রোববার এ সভা হয়।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ও পররাষ্ট্রসচিব এম. হুমায়ুন কবির। এতে সভাপতিত্ব করেন এসইউবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল কবির।
আলোচনায় বিজয় দিবসের তাৎপর্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আগামী বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে কথা বলেন এসইউবির স্থাপত্য বিভাগের প্রধান ড. সাজিদ বিন দোজা এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের (সিডিসি) পরিচালক আবু তাহের খান।
অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জানান হেলথ সায়েন্স ও ফার্মেসি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. নওজিয়া ইয়াসমিন।
রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির তার বক্তব্যে বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের ধারাবাহিক বিবরণ দেন।
তিনি বলেন, ১৯৩৮ সালের বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইনের মাধ্যমে এ অঞ্চলের মুসলমানদের মধ্যে প্রথমবারের মতো স্বতন্ত্র জাতিসত্তার যে বোধ তৈরি হয়, সেটিই পরবর্তী সময়ে বিকশিত ও পরিশীলিত হতে হতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে এসে পূর্ণতা লাভ করে।
হুমায়ুন বলেন, “১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝিতে তৎকালীন শীর্ষস্থানীয় বাঙালি অর্থনীতিবিদদের চিন্তা থেকে উৎসারিত ‘টু ইকোনমিক থিওরি’ এবং তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুর ১৯৬৬ সনের ৬ দফাই বস্তুত বাঙালির স্বাধীনতা সংগ্রামকে গতিময়তা দান করে। আর একাত্তরে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার জন্য বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণই ছিল পথনির্দেশনা।”
তিনি ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিলের ঘোষণাপত্রকে বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও তার মুক্তিযুদ্ধের আদর্শিক ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করেন।
হুমায়ুন আরও বলেন, ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি সাগরের ন্যায় বিশাল কর্মযজ্ঞ, যেখানে নানা ধারার মানুষ নদীর মতো করে এসে একসঙ্গে মিলিত হয়েছিল। আর সেখানকার বৃহত্তম ধারাটি ছিল কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের সম্মিলিত ধারা।’
বক্তব্যে বাংলাদেশের আগামী ৫০ বছরের একটি সম্ভাব্য রূপকল্পও তুলে ধরেন এ কূটনীতিক।
সভাপতির ভাষণে অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল কবির মুক্তিযুদ্ধে জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, মুনীর চৌধুরীসহ বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। সেই সঙ্গে পাকিস্তানি আমলের নানা বৈষম্যের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘কর্নেল এম এ জি ওসমানী নিছক বাঙালি হওয়ার কারণেই তৎকালীন সেনাবাহিনীতে আর পদোন্নতি পাননি।’
আনোয়ারুল কবির আরও বলেন, ‘বিজয়ের এ ৫০তম বার্ষিকীতে দাঁড়িয়ে আমরা স্বপ্ন দেখতে চাই যে বৈভব ও সমৃদ্ধিতে বাংলাদেশ অচিরেই পশ্চিমের অনেক উন্নত দেশকেও ছাড়িয়ে যাবে।’
অনুষ্ঠানে এসইউবির বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এটি সঞ্চালনা করেন এসইউবির বিজনেস স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক মেহজাবীন ফারুক।