বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আদালতে নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা দাবি তামিমার

  •    
  • ২০ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৫:৫৫

তামিমা তার অন্তঃসত্ত্বার প্রমাণ হিসেবে কিছু মেডিক্যাল রিপোর্টের কাগজপত্র আদালতে উপস্থাপন করেন। তবে আদালত এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ দেখতে বা শুনতে রাজি হয়নি।

‘আমি ছয় মাসের আন্তঃসত্ত্বা, আমার গর্ভে থাকা সন্তান নাসির হোসেনের ঔরসজাত সন্তান। আজ যদি এই বিয়ের বৈধতা দেয়া না হয়, তাহলে আমার অনাগত সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এই নিষ্পাপ শিশু পৃথিবীর আলো দেখার পর তার দিকে সমাজ আঙুল তুলবে।’

ডিভোর্স ছাড়া অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার মামলায় সোমবার ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেনের আদালতে হাজিরা দিতে এসে এসব কথা বলেন ক্রিকেটার নাসির হোসেনের স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মি।

এ সময় তামিমা তার অন্তঃসত্ত্বার প্রমাণ হিসেবে কিছু মেডিক্যাল রিপোর্টের কাগজপত্র আদালতে উপস্থাপন করেন। তবে আদালত এ বিষয়ে কোনো প্রমাণ দেখতে বা শুনতে রাজি হয়নি।

বিষয়টি আদালতে নাকচ হয়েছে বলে নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেন বাদী তামিমার আগের স্বামী রাকিব হাসানের আইনজীবী ইশরাত জাহান।

তিনি বলেন, ‘বাদীপক্ষে বিষয়টি নিয়ে জোরালো বিরোধিতা করা হয়েছে। এসব কাগজপত্র আদালতে জমা দিতে হলে বাদীপক্ষের আইনজীবীকে দিয়ে সিন করিয়ে ফিরিস্তিযোগে আদালতে জমা দিতে হয়। তা তারা না করে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতির আবেদনের সঙ্গে কাগজটি আদালতে প্রদর্শন করলে বিরোধিতার ফলে আদালত তা গ্রহণ করেনি।’

এই আইনজীবী আরও বলেন, ‘এতে করে আরও প্রমাণিত হয় তারা অনৈতিক অপরাধ অব্যাহত রেখেছেন। কারণ অবৈধ সম্পর্ক করলে তো অন্তঃসত্ত্বা হতেই পারে। কে তার স্বামী আদালতের দেয়া সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে তিনি (তামিমা) অন্তঃসত্ত্বা হয়ে মামলাটি নিজেই প্রমাণ করে দিয়েছেন।

‘তারা (নাসির-তামিমা) নিজেরাই প্রমাণ করে দিচ্ছেন, তারা তাদের সম্পর্ক আরও পাকাপোক্ত করেছেন। এসব কারণেই স্বামীকে তালাক না দিয়ে তিনি দ্রুত নাসিরকে বিবাহ করে যে অন্যায় করেছেন, তা প্রমাণিত হতে নিজেই আজ সাহায্য করছেন।’

এদিন আসামিদের আইনজীবী মোট তিনটি আবেদন করেন। এসব আবেদন ছিল অভিযোগ গঠনের তারিখ পেছানো, ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি এবং স্থায়ী জামিন।

শুনানি শেষে মামলার তিন আসামি নাসির, তামিমা, তামিমার মা সুমি আক্তারসহ তিনজনের জামিন আবেদন মঞ্জুর করে আদালত। সেই সঙ্গে ২৪ জানুয়ারি মামলাটির অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়।

বাদীর আইনজীবী জানান, মামলায় নাসির ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। আদালত আবেদনটি নামঞ্জুর করেছে।

এর আগে গত ৩১ অক্টোবর ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিমের আদালতে আসামিরা আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এরপর মামলা বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় তা বদলির আদেশ দেন।

তারও আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর নাসির, তামিমা ও তামিমার মা সুমি আক্তারকে ৩১ অক্টোবর আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়ে সমন জারি করা হয়। সেদিন নাসির ও তামিমার বিয়ে অবৈধ বলে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

এরপর মামলার বাদী ও তামিমার প্রথম স্বামী ব্যবসায়ী মো. রাকিব হাসানের পক্ষে তার আইনজীবী ইশরাত জাহান তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। আদালত তাদের ৩১ অক্টোবর আদালতে হাজির হতে সমন জারি করে।

তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাকিবকে তালাক দেননি তামিমা। আইনগতভাবে রাকিব তালাকের কোনো নোটিশও পাননি। তামিমা উল্টো জালিয়াতি করে তালাকের নোটিশ তৈরি করে তা বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন। যথাযথ প্রক্রিয়ায় তালাক না দেয়ায় তামিমা এখনও রাকিবের স্ত্রী হিসেবে বহাল রয়েছেন। দেশের ধর্মীয় বিধিবিধান ও আইন অনুযায়ী এক স্বামীকে তালাক না দিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করা অবৈধ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমন পরিস্থিতিতে ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও তামিমা তাম্মীর বিয়ে অবৈধ।

এ দুজনের পাশাপাশি ‘অবৈধ’ বিয়েতে সহযোগিতা করায় তামিমার মা সুমি আক্তারকেও দোষী বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী তালাকের কাগজ ছাড়া অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগে চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি নাসির ও তার স্ত্রী তামিমার বিরুদ্ধে মামলাটি করেন রাকিব।

মামলায় তাদের বিরুদ্ধে বিয়ের তথ্য গোপন করে অন্যত্র বিয়ে, অন্যের স্ত্রীকে প্রলুব্ধ করে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে, ব্যভিচার ও মানহানির অভিযোগ আনা হয়। আদালত পিবিআইকে মামলার বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমার নির্দেশ দেয়।

চলতি বছরের ভালোবাসা দিবসে জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে প্রেমিকা তামিমাকে বিয়ে করেন নাসির। তাদের দাবি, আইন মেনে ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী বিয়ে করেছেন তারা।

তামিমার আগের স্বামী রাকিবের দাবি, বিয়ের খবর সংবাদমাধ্যমে জানার পর মামলাটি করেন তিনি।

রাকিব জানান, তামিমার সঙ্গে ১১ বছরের দাম্পত্য জীবন কাটিয়েছেন তিনি। তাদের আট বছরের কন্যাসন্তান রয়েছে। অথচ তাকে ডিভোর্স না দেয়ার পরও নাসির জেনেশুনে তামিমাকে বিয়ে করেন৷

অভিযোগে আরও বলা হয়, নাসিরকে বিয়ে করার আগে আরও একজনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন তামিমা। তাকে বিয়ে করে ছয় মাস সংসার করার পর ফিরে আসেন তিনি। এরপর নতুন করে নাসিরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান সৌদি এয়ারলাইনসের এ বিমানবালা।

এ বিভাগের আরো খবর