কুমিল্লায় যুবলীগ নেতার আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলায় স্ত্রীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
কুমিল্লার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে রোববার বিকেলে হাজির হয়ে দ্বিতীয়বার জামিনের আবেদন করেন ওই নেতার স্ত্রী সৈয়দা সাজিয়া শারমিন উষা। বিচারক সোহেল রানা জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মামলার পর গত নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে উচ্চ আদালত থেকে নেয়া জামিনে ছিলেন তিনি।
কুমিল্লা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. সালাউদ্দিন রাতে বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের মাধ্যমে উষাকে রোববার সন্ধ্যায় কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গত ২২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় সদরের বারপাড়া এলাকার বাসায় আত্মহত্যা করেন যুবলীগ নেতা এমরান হোসেন মুন্না। ২৯ বছর বয়সী এই তরুণ কুমিল্লা মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মুন্না আত্মহত্যার প্রস্তুতি নিয়ে স্ত্রীকে ছবি ও মেসেজ পাঠান। হোয়াটসঅ্যাপে স্ত্রীকে উদ্দেশ করে লেখেন, ‘আর পাঁচটা মানুষের মতো আমার জীবন না, আমি আজ চলে যাইতেছি। মনে রাখিস তোর বেইমানি ও পরকীয়ার জন্য আত্মহত্যা করলাম আমি...।'
কিন্তু ছবি বা মেসেজ দেখেও তাতে কর্ণপাত করেননি স্ত্রী। অভিমান করে নিজের শোবার ঘরেই সিলিং ফ্যানে ওড়না প্যাঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন মুন্না। পরে পরিবারের লোকজন দরজা ভেঙে হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় পরদিন রাতে মুন্নার স্ত্রী উষার বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন নিহতের বাবা মতিউর রহমান।
মামলায় বলা হয়, জেলার লাকসামের রাজাপুর এলাকার খিলা বাজার গ্রামের সৈয়দা সাজিয়া শারমিন ঊষা একসময় কুমিল্লা কমার্শিয়াল ইনস্টিটিউটের (বর্তমানে সরকারি সিটি কলেজ) শিক্ষার্থী ছিলেন। এই কলেজেই পড়তেন মুন্নাও। কলেজ জীবনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা।
৮ বছর প্রেমের পর ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি পরিবারের অমতে তারা বিয়ে করেন। পরে উষা ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। আর মুন্না কুমিল্লায়ই ঠিকাদারি ব্যবসা করতেন। দিন দিন তাদের মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরে।
স্বজনদের অভিযোগ, উষা ঢাকায় সোহেল নামের এক ছেলের সঙ্গে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। মেয়েটি মুন্নাকে বিভিন্নভাবে মানসিক নির্যাতন করতেন। চাহিদামতো টাকা দিতে না পারার অজুহাতে মরে যেতেও বলতেন। এতে মানসিকভাবে মুন্না ভেঙে পড়েন। আত্মহত্যার দিন ছবি ও মেসেজ পাঠানোর পরও উষার উসকানিমূলক কথাবার্তায় মুন্না ক্ষোভে আত্মহত্যা করেন।