বিজয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাওয়ায় সাভারের একটি পোশাক কারখানার পাঁচ শ্রমিককে ছাঁটাইয়ের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শ্রমিকরা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও করেছেন। তবে কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, ১৬ ডিসেম্বর কারখানা বন্ধ ছিল। স্মৃতিসৌধে যাওয়ার কারণে নয়, আগের বিশৃঙ্খলার কিছু ঘটনায় তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ ও আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে রোববার বিকেলে দেয়া অভিযোগে শ্রমিকরা জানান, শনিবার তাদের ছাঁটাই করা হয়।
ওই শ্রমিকরা হলেন ইমন আলী বাকাউল, মো. বিপ্লব, আলীয়ার আহমেদ, মো. আশরাফুল ও আবুল মালেক। তারা আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার লিভেল সুয়েটেক্স বিডি লিমিটেড কারখানায় কাজ করতেন।
অভিযোগে শ্রমিকরা জানান, গত ১৬ ডিসেম্বর তারা জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিতে যান। সে সময় কারখানা থেকে তাদের ফোন করে অনুপস্থিতির কারণ জানতে চাওয়া হয়।
চাকরিহারা শ্রমিক আব্দুল মালেক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের আগে থেকে কিছু জানানো হয়নি যে কারখানা খোলা থাকবে ১৬ই ডিসেম্বর। সেদিন সকালে কারখানা থেকে ফোন দিয়ে সুপারভাইজার বলে কারখানায় আসতে। আমরা তখন স্মৃতিসৌধে, কারখানায় আসবো কী করে?’
তিনি জানান, কারখানায় অনুপস্থিতির অপরাধে গত শনিবার তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়। কারখানার মালিক মনির বিশ্বাস হুমকি দিয়ে তাদের কারখানা থেকে বের করে দেন।
শ্রমিকরা আরও জানান, মনির বিশ্বাস নিজেকে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে তাকে হুমকি দেন। তবে কী কারণে হুমকি দিয়েছেন তা শ্রমিকরা পরিষ্কার করে জানাননি।
এ বিষয়ে কারখানার মালিক মনির বিশ্বাস বলেন, ‘আসলে এমন কোনো ঘটনা না। আসলে এই শ্রমিকগুলো অনেক দিন থেকে কারখানায় সমস্যার সৃষ্টি করছে। তাদেরকে জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাওয়ার জন্য চাকরিচ্যুত করা হয়নি। তাদের বেতন দেয়া হবে। সামনের মাসে সবার বেতনের সঙ্গে দিয়ে দেয়া হবে।’
১৬ ডিসেম্বর কারখানার খোলা ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিজয় দিবসে কারখানা বন্ধ ছিল। আমার সিসিটিভি ফুটেজ চাইলে আপনারা এসে দেখতে পারেন। আর বর্তমান প্রজন্ম কি বিজয় দিবসকে অমান্য করে কিছু করতে পারে?’
শ্রমিকদের ছাটাই প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘প্রায় ১৫ দিন আগে রাতের বেলা আমার কারখানায় ট্রাকে সুতা আসে। ওই সময় সুতা নামাতে বলায় ওরা অসম্মতি জানায়। তখন আমার মামা ও কারখানার দুই সুপারভাইজারের সঙ্গে অসদাচরণ করে ওরা চলে যায়।
‘পরদিন আমি গিয়ে তাদের আবার কারখানায় ফিরিয়ে এনে কাজে যোগ দেয়াই। যেটা ছিল আমার ভুল। এরপর থেকেই তারা সিন্ডিকেট করে বিভিন্ন সময় কারখানায় ঝামেলা তৈরির চেষ্টা করত।’
এসব কারণে ওই পাঁচ শ্রমিককে ছাটাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।