দেশের কোথাও আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) অবস্থান নেই। তাদের কখনও বাংলাদেশে দেখা যায়নি। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন এ তথ্য জানিয়ে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন এ দেশে আরসার উপস্থিতি প্রমাণে।
মিয়ানমার সম্পর্কিত জাতিসংঘের বিশেষ দূত ‘কক্সবাজারের ক্যাম্পগুলোতে আরসা আছে’ বলে যে দাবি করেছেন তার জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশে আরসা দেখিনি। কেউ তাদের কখনও দেখেনি। এখন কেউ যদি বলে, এখানে আরসা আছে, তবে তাদেরকেই তা প্রমাণ করতে হবে। কারা আরসার নেতা-কর্মী তা দেখিয়ে দিতে হবে।
‘আমরা দেখতে চাই কারা কারা আরসা। জাতিসংঘের প্রতিনিধি যদি বলে থাকেন, তাহলে তারা দেখিয়ে দিক, আমরা দেখি।’তিনি বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বহিরাগত প্রবেশ ঠেকাতে পদক্ষেপ নিচ্ছি। ক্যাম্পে যত্রতত্র ঘোরাঘুরি বন্ধের চেষ্টাও করছি। এটা আবার তারা পছন্দ করছেন না।’
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যৎ তাদের মাতৃভূমিতে। তাই তাদের নিজ দেশে, নিজ ভিটায় ফিরে যাওয়ার বিকল্প নেই। আমরা তাদের দ্রুত ফিরে যাওয়ার আশায় আছি।‘তাদের প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া শুরুও করেছিলাম। কিন্তু সেখানে সেনা শাসনের কারণে সবকিছু ভেস্তে গেল। আমরা তা আবার শুরুর অপেক্ষায় আছি।’
বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার অযৌক্তিক দাবির কথা তুলে ধরে মোমেন বলেন, ‘তারা অনেকে রোহিঙ্গাদের অবাধ ঘোরাঘুরির সুযোগ চান। বাংলাদেশিদের মতোই তাদের মবিলিটি চায়, জিরো ডিসক্রিমিনেশন চায়। চাকরির সুযোগ চায়।
‘আমরা রোহিঙ্গাদের অবাধ চলাচলের সুযোগ দিতে রাজি নই। জাতিসংঘসহ অন্যান্য বিদেশি সংস্থা বা দেশ যদি রোহিঙ্গাদের এর চেয়ে উন্নত জীবন দিতে চায়, তাহলে তারা তাদের নিয়ে যাক। কিন্তু তারা একটি পরিবারসহ কয়েকজনকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যেতে চায়। আমি বলেছি, একটি পরিবার নয়, যত খুশি রোহিঙ্গা নিয়ে যাও।’
মূলত বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা নিজেদের স্বার্থে রোহিঙ্গাদের দেরিতে ফেরাতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যারা এনজিওর ব্যবসা করেন, তারা নানা কথা বলে থাকেন। রোহিঙ্গাদের ফেরাতে যত বিলম্ব হবে, ততই লাভ তাদের। তারা চাকরি ও ব্যবসা করতে পারবেন। কিন্তু আমাদের কাছে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিকল্প নেই।’
এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মিয়ানমারের মানবাধিকার পরিস্থিতিবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ।রোববার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সাক্ষাৎকালে টম অ্যান্ড্রুজকে তার নিয়োগের জন্য অভিনন্দন জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি অসংখ্য প্রতিবন্ধকতা ও চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও বাংলাদেশে বিপুলসংখ্যক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের (এফডিএমএন) অস্থায়ী আশ্রয় দেয়ার মানবিক প্রচেষ্টার নানা দিক তুলে ধরেন।