টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক (আরআই) আক্তারুজ্জামান খান।
টাঙ্গাইল প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাড়িতে চুরির ঘটনার মামলা নিতে চাননি ওসি। পরে মামলা হলেও আসামিদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
তবে ওসি ওহাব মিয়া জানান, ভাই-ভাতিজাকে আসামি করে চুরির মামলা করেছেন আক্তারুজ্জামান। খোঁজ নিয়ে তিনি জেনেছেন জমির বিরোধের জেরে সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা মিথ্যা মামলা করেছেন।
আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘গত ২৫ নভেম্বর রাতে আমার বাড়িতে চুরি হয়। এ সময় আমার ঘর থেকে ৩০ ভরি স্বর্ণ, ১ লাখ টাকা ও একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়। পরে ভূঞাপুর থানায় চুরির বিষয়টি অবহিত করলে থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) এজেডএম তৌফিক এলাহি, এসআই ফাহিমসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
‘ওই দিন রাতেই আমি উপজেলার শিয়ালকোল গ্রামের রাজ্জাক খান ও তার ছেলে আবির খানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করি। পরদিন ২৬ নভেম্বর বিকেলে থানার ওসি ওহাব মিয়া ও এসআই ফাহিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং মামলা না করার জন্য আমাকে চাপ প্রয়োগ করেন। ওই দিনই সন্ধ্যায় আবার আমাকে থানায় ডেকে নিয়ে বিভিন্ন হুমকি দেন এবং মামলা করলে ক্ষতি হবে বলেও জানিয়ে দেন ওসি ওহাব মিয়া।’
লিখিত বক্তব্যে আক্তারুজ্জামান আরও জানান, গত ১০ ডিসেম্বর ওসির নির্দেশে একটি সালিশ বৈঠক হয়। তাকে এসআই মেহেদীর নেতৃত্বে পুলিশ দিয়ে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করা হয়। পরে তিনি টাঙ্গাইল আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা নিতে নির্দেশ দিলে ওসি তা রেকর্ড করেন। তবে এখনও কোনো আসামি গ্রেপ্তার করেননি ওসি।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর থানার ওসি ওহাব মিয়া বলেন, ‘পাঁচ দিন উনি (আক্তারুজ্জামান) বাড়িতে ছিলেন না। এ সময় বাড়িতে চুরি হয়েছে মর্মে তিনি তার ভাই রাজ্জাক খান ও ভাতিজা আবির খানের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করতে আসেন। যেখানে তিনি বাড়িতেই ছিলেন না, তাহলে কীভাবে তিনি নাম উল্লেখ করে মামলা করছেন? এমন প্রশ্ন ওঠায় আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্তে যাই।
‘তদন্তে স্পষ্ট হই জমিসংক্রান্ত বিরোধের জেরে তিনি বৃদ্ধ ভাই ও ঢাকা কলেজ থেকে অনার্স পাস করা ভাতিজাকে হয়রানি করতেই মামলাটি করছেন।’
ওসি আরও বলেন, ‘সম্পূর্ণ ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের চেষ্টাসহ হয়রানির উদ্দেশ্যে করা মামলার অভিযোগ হওয়ায় আমি সেটি থানায় লিপিবদ্ধ করিনি। পরে তিনি আদালতে অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে অভিযোগ করেন। এরপর আদালতের নির্দেশে থানায় মামলাটি রুজু হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে, দোষী ব্যক্তিদের অবশ্যই গ্রেপ্তার করা হবে।’