‘সরকার বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে তাজউদ্দীন আহমদের নাম উচ্চারণ করেনি’ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রাজ্জাক।
দলটির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা। তিনি বলেন, দেশ স্বাধীনের এই পাঁচ দশকে বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী এক সেকেন্ডের জন্য একবারের জন্যও কি তাজউদ্দীন আহমদ, জেনারেল এম এ জি ওসমানীর নাম উচ্চারণ করেছেন।
পুরো বিষয়টাকে মার চেয়ে মাসির দরদ বেশি বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সব নেতা-কর্মী যেকোনো অনুষ্ঠানে প্রথমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করেন, শ্রদ্ধা জানান। তারপর জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করে অনুষ্ঠান ও বক্তব্য রাখেন। আওয়ামী লীগ সব সময়ই মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের প্রতি, মুক্তিযুদ্ধে যারা নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে।
টাঙ্গাইলের সখিপুর উপজেলায় রোববার সকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন মন্ত্রী।
সিলেট নগরের রেজিস্ট্রারি মাঠে শনিবার সিলেট মুক্ত দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও গণসংগীত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করছে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম উচ্চারণ করা হয়নি, তাজউদ্দীন আহমদের কথা উচ্চারণ করা হয়নি, এমনকি মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে আড়ালে রেখেছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার যুদ্ধ এ দেশের আপামর জনতা করেছে; একজন ব্যক্তি বা একক কোনো দলের নয়।
ইতিহাস বিকৃত প্রসঙ্গে কৃষিমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ কখনও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করে না। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপির নেতারা অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছেন। তারা বাংলাদেশকে পাকিস্তানের ধারায় ফিরিয়ে নিতে চেয়েছেন। তাদের মুখে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতির কথা শোভা পায় না।
মন্ত্রী বলেন, শুধু বিএনপি, জামায়াত, রাজাকার ও আলবদর নয়, আন্তর্জাতিক চক্র যারা দেশের স্বাধীনতাকে সমর্থন করেনি, বারবার এ দেশে বিপর্যয় ঘটাতে চেয়েছে, তারাও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষণ্ন করতে সারাক্ষণ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা এসব দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের উদাহরণ।
সরকার প্রতি বছর দেশের ১ কোটি পরিবারকে ১০ টাকা কেজিতে চাল দিচ্ছে উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশের গরিব, অসহায় ও নিম্ন আয়ের মানুষেরা খাওয়ার জন্য যাতে কোনো কষ্ট না পায়, সে জন্য এ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে ওএমএস, টিআর, কাবিখার মাধ্যমে চাল দেয়া হচ্ছে।
দেশে খাদ্য নিয়ে কোনো হাহাকার নেই। কোনো মানুষ না খেয়ে নেই।
পরে কৃষিমন্ত্রী সখিপুর উপজেলা পরিষদ মাঠে উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেন। উপজেলা পরিষদ মাঠে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য ফজলুর রহমান খান ফারুক।
সখিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুতুব উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সংসদ সদস্য মির্জা আজম, শিক্ষা ও মানবসম্পদ সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, সদস্য এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাওছার, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য জোয়াহেরুল ইসলাম, সংসদ সদস্য তানভীর হাসান, সাবেক সংসদ সদস্য অনুপম শাহজাহান জয় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনে টাঙ্গাইল জেলা ও সখিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।