ঢাকার সাভারে পোশাকশ্রমিক এক গৃহবধূকে সিগারেটের ছ্যাঁকা ও গরম পানি দিয়ে ঝলসে দেয়ার মামলায় শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, রোববার বিকেল ৪টায় তাদের ঢাকার মুখ্য বিচারিক আদালতে তোলা হয়েছে।
শনিবার মধ্যরাতে সাভারের গেন্ডা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে বিকেলে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন গৃহবধূ শান্তা ইসলাম।
শান্তার বাবার বাড়ি যশোরের ঝিকরগাছা থানার কৃষ্ণনগর গ্রামে।
গ্রেপ্তাররা হলেন, শান্তার শ্বশুর নজরুল ইসলাম ও শাশুড়ি খুরশিদা বেগম খুশি। মামলার অন্য আসামিরা হলেন শান্তার স্বামী জহিরুল ইসলাম সাগর, সাগরের মামাতো ভাই নিরব হোসেন শাওন, সাইফুল ইসলাম ও জুলহাস।
মামলার এজাহারে বলা হয়, প্রায় দুই বছর আগে সাগর ও শান্তার মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে সাগর বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে তার বাড়িতে বিয়ের জন্য অনশন করেন শান্তা। পরে বাধ্য হয়ে শান্তাকে বিয়ে করেন সাগর।
কিন্তু বিয়ের পর থেকেই শান্তার ওপর নির্যাতন শুরু হয়। শান্তার দাবি, সাগরের পুরো পরিবারই তাকে নির্যাতন করেন। তাছাড়া পরিবারের অমতে বিয়ে করায় শান্তার বাবা-মার সঙ্গেও তেমন যোগাযোগ ছিল না। কিন্তু সাগর যৌতুকের জন্য চাপ দেয়ায় বাবার বাড়ি থেকে কিছু টাকাও এনে দেন শান্তা।
সাগর পুনরায় যৌতুক দাবি করলে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে ধামরাইয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে একটি পোশাক কারখানায় কাজ নেন শান্তা। এরপরও নির্যাতন বন্ধ হয়নি।
সর্বশেষ ১৩ ডিসেম্বর কৌশলে মোবাইল ফোনে গেন্ডার বাড়িতে শান্তাকে ডেকে নেন সাগর। এ সময় শান্তাকে মারধর করে মুখে বিষ ঢেলে দেন সাগর ও তার পরিবারের লোকজন।
এরপর শান্তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের ছ্যাঁকা ও গরম পানি ঢেলে ঝলসে দেন তারা। পরে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
সাভার মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদ হাসান জানান, গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় শনিবার মামলা হয়েছে। রাতে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে রোববার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।’