বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মন্ত্রীর সামনে সাবেক কমান্ডারকে নিয়ে বিষোদ্গার মুক্তিযোদ্ধার

  •    
  • ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৪:৫৩

জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মন্ত্রীর সামনে এ ধরনের বক্তব্যে অতিথিরা বিব্রত ছিলেন। আমরা পরিস্থিতি সামাল দিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত হোসেনকে নিবৃত করার চেষ্টা করেছি। আমরা এ পরিস্থিতির জন্য লজ্জিত ও দুঃখিত।’

মন্ত্রীর সামনে সাবেক কমান্ডারকে নিয়ে এক বীর মুক্তিযোদ্ধার বিষোদ্গার ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে বরগুনায়।

বিষয়টি নিয়ে বিব্রত খোদ জেলা প্রশাসন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শনিবার ওই ঘটনা ঘটে।

অনুষ্ঠানে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দেয়ার অভিযোগ এনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের সামনেই বরগুনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার আবদুর রশীদ মিয়ার সমালোচনা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত হোসেন।

এ সময় ওই মুক্তিযোদ্ধাকে বক্তব্য বন্ধ করে মঞ্চ থেকে নেমে যেতে বলেন আবদুর রশীদ। একপর্যায়ে তিনি ওই মুক্তিযোদ্ধার ওপর ক্ষিপ্ত ও উত্তেজিত হন। পরে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের শেষ দিন শনিবার বরগুনার সার্কিট হাউস মাঠে ১ হাজার ২০০ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারকে সংবর্ধনা দেয় জেলা প্রশাসন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যের শুরুতেই এনায়েত হোসেন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ পড়া এবং ভুয়া ব্যক্তিদের তালিকাভুক্তকরণ নিয়ে সমালোচনা শুরু করেন।

এনায়েত বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেকে প্রশিক্ষণ নিয়েছে, ক্যাম্পে দিনের পর দিন না খেয়ে থেকেছে অথচ তাদের নাম তালিকায় আসেনি। যারা তখন কিছুই করেনি তাদের নামও তালিকায় এসেছে।’

সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুর রশীদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আপনারা কে কোথায় কী করেছেন আমার জানা আছে। অথচ আমি কে এ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। আমি শুধু মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিইনি, অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা তৈরি করেছি। যুদ্ধপরবর্তী সময়ে চাকরি করেছি, দেশ গড়ার কাজে নিয়োজিত হয়েছি।’

মঞ্চে উপস্থিত সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুর রশীদ উত্তেজিত হয়ে অতিথিদের সামনেই এনায়েত হোসেনকে বক্তৃতা বন্ধ করতে বলেন। একপর্যায়ে জেলা প্রশাসনের দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাকে বক্তৃতা বন্ধ করে চলে যেতে বলেন।

ওই দুজন ম্যাজিস্ট্রেটকে বলতে শোনা যায়, ‘এটা জেলা প্রশাসনের প্রোগাম, আপনি বিশৃঙ্খলা করছেন, আপনি যান এখান থেকে। জবাবে এনায়েত বলেন, মন্ত্রী মহোদয় বললে আমি নেমে যাব।’

মঞ্চে অন্যদের মধ্যে ছিলেন বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা, বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি জাহাঙ্গীর কবীরসহ আরও অনেকে।

এনায়েত হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অনুষ্ঠানে ইনভাইট (আমন্ত্রণ) পাইনি। এমনকি আমার নামে ক্রেস্টও করা হয়নি। আমি যখন এটা জানতে চেয়েছি, তখন আবদুর রশীদ আমাকে প্রশ্ন করে আমি কে! আমি কে সেটাই মন্ত্রীর সামনে সবাইকে জানাতে চেয়েছিলাম। কিন্ত আমাকে থামিয়ে দেয়া হয়েছে।

‘এমনকি জেলা প্রশাসনের দুজন ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে মঞ্চ থেকে নেমে যেতে বলেছেন। এটা স্রেফ ধৃষ্টতা। আবদুর রশীদ অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাকে বাদ দিয়ে অনৈতিকভাবে ভুয়াদের মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছেন। তার এসব কর্মকাণ্ড মন্ত্রীকে জানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে থামিয়ে দেয়া হয়েছে।’

সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবদুর রশীদ বলেন, ‘উনি (এনায়েত) এলাকায় থাকেন না। আমরা মন্ত্রীর প্রোগ্রামের জন্য অনেক কষ্ট করেছি। মঞ্চে হঠাৎ এসে অতিথিদের সামনে বিব্রতকর বক্তব্য দেয়ার কোনো মানে হয় না। ওনার ক্ষোভ থাকলে সেটা আমাকে বলতে পারতেন বা মন্ত্রীকে জানাতে পারতেন।’

জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মন্ত্রীর সামনে এ ধরনের বক্তব্যে অতিথিরা বিব্রত ছিলেন। আমরা পরিস্থিতি সামাল দিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা এনায়েত হোসেনকে নিবৃত করার চেষ্টা করেছি। আমরা এ পরিস্থিতির জন্য লজ্জিত ও দুঃখিত।’

এ বিভাগের আরো খবর