পুঁজিবাজারের তালিকাভুক্ত সামিট পাওয়ার লিমিটেডের আরও একটি পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এই নিয়ে মোট তিনটি পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ হলো সামিটের।
সবশেষ বন্ধ হওয়া ২৪ দশমিক ৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন প্ল্যান্টটির নাম মাধবদী পাওয়ার প্ল্যান্ট ইউনিট-২। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে সরকারের পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (পিপিএ) বা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় ১৫ ডিসেম্বর। ফলে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) বা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত প্ল্যান্টটি বন্ধ থাকবে।
এই বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের বিষয়টি রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
সামিটের পক্ষ থেকে দেয়া বার্তায় বলা হয়েছে, সামিট পাওয়ার লিমিটেডের অন্যতম সামিট মাধবদী পাওয়ার প্ল্যান্ট ইউনিট-২ (২৪.৩০ মেগাওয়াট, গ্যাস ভিত্তিক) এর পাওয়ার পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্টের (পিপিএ) মেয়াদ ১৫ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে। প্ল্যান্টটির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে আবেদন করা হয়েছে। বিষয়টি বিদ্যুৎ, শক্তি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগে সক্রিয় বিবেচনাধীন রয়েছে।
সামিট থেকে আরও বলা হয়েছে, কোম্পানির পিপিএ মেয়াদ শেষ হওয়ায় বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যরাত থেকে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি) বা মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
সামিট পাওয়ার লিমিটেডের সচিব স্বপন কুমার পাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্ল্যান্ট বন্ধের বিষয়টি বিনিয়োগকারীদের ডিএসই ওয়েবসাইটে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আমাদের নিয়ন্ত্রণে ১৫টি প্ল্যান্ট আছে। এর মধ্যে আগে আরও দুটি প্ল্যান্টের মেয়াদ শেষ হয়েছে। সম্প্রতি ১৫ ডিসেম্বর আরও একটির মেয়াদ শেষ হয়েছে।
‘এখনও সামিটের হাতে ১২টি প্ল্যান্ট রয়েছে। এগুলোর একেকটির মেয়াদ একক সময়ের। প্ল্যান্ট বন্ধ হলেও সামিটের আয়ে কোনো প্রভাব পড়বে না।’
সামিট পাওয়ার লিমিটেডের আরেকটি পাওয়ার প্ল্যান্ট মদনগঞ্জ পাওয়ার প্লান্টের বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মেয়াদ চলতি বছরের ৩১ মার্চ শেষ হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার ছয় মাস পর ২৭ সেপ্টেম্বর ডিএসই ওয়েব সাইটে ঘোষণা দেয়া হয়, প্ল্যান্টটির ১০২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ছিল। মেয়াদ শেষ হওয়ায় উৎপাদন বন্ধ আছে।
একই সময়ে জানানো হয়, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কাছে পাওয়ার প্ল্যান্টের অর্থ পরিশোধ বাবদ ৬৩১ কোটি ৪২ লাখ ৪৫ হাজার ৮১৯ টাকা পাবে সামিট পাওয়ার। কোম্পানিটিকে টাকা দিতে আদালত রায় দিলেও এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেছে পল্লী বিদ্যুৎ।
এর আগের সামিট পাওয়ার লিমিটেডের শতভাগ মালিকানাধীন কুমিল্লার কুটুম্বপুরের ১৩ দশমিক ৫০ মেগাওয়াটের গ্যাসভিত্তিক চান্দিনা পাওয়ার প্লান্ট ইউনিট-২-এর উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় উৎপাদন বন্ধ করা হয় প্ল্যান্টটির।
গত ১৫ নভেম্বর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে প্ল্যান্ট বন্ধের বিষয়টি জানানো হয়। বলা হয়, পল্লী বিদ্যুতের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে ১৪ নভেম্বর।
লেনদেন চলা অবস্থায় রোববার সামিট পাওয়ার লিমিটেডের শেয়ার দর কমেছে ১.০১ শতাংশ। ৩৯ টাকা ৮০ পয়সার শেয়ার লেনদেন হচ্ছে ৩৯ টাকা ৪০ পয়সায়।
কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ১ হাজার ৬৭ কোটি টাকা। মোট শেয়ার আছে ১০৬ কোটি ৭৮ লাখ ৭৭ হাজার ২৩৯টি।
জুন ক্লোজিংয়ের এই কোম্পানিটি ২০২০ সালে ৩৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছে। ২০২১ সালেও একই হারে নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি।
২০১৯ সালে থেকে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় বাড়ছে। এই সময়ে শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল ৪ টাকা ৭৮ পয়সা। ২০২০ সালে ইপিএস ছিল ৫ টাকা ১৭ পয়সা। ২০২১ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৫ টাকা ২৫ পয়সা।