ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষদের বিশেষ অধিবেশন আয়োজন করেছে পাকিস্তান। আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে করা এ অধিবেশনে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহ্রিয়ার আলমের অংশ নেয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তিনি সফর বাতিল করেছেন।
পাকিস্তানের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপনের সময়কালে প্রতিমন্ত্রীর এ সফর নিয়ে আগে থেকেই চলছিল নানা আলোচনা।
ঢিলেঢালা কূটনৈতিক সম্পর্কের দেশ পাকিস্তানে এক দশকের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে মন্ত্রী পর্যায়ের প্রথম সফর ছিল এটি।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহ্রিয়ার আলম ও পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রতিনিধিদল নিয়ে অধিবেশনে যোগ দেবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। শনিবার দুপুরে এমিরেটস এয়ারওয়েজের নিয়মিত ফ্লাইটে দুবাই হয়ে তার ইসলামাবাদ যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রতিমন্ত্রী না যাওয়ায় পররাষ্ট্রসচিব সেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, আফগানিস্তান পরিস্থিতি নিয়ে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পরিষদের বিশেষ অধিবেশন আয়োজন করে ১৮ ও ১৯ ডিসেম্বর। পররাষ্ট্রসচিব ১৮ ডিসেম্বর সিনিয়র অফিশিয়াল বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন এবং পরের দিন মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নেবেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। এমন প্রস্তুতি থাকলেও শনিবার নির্ধারিত সফরে যাননি শাহ্রিয়ার আলম।
প্রতিমন্ত্রী করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসায় দুই দিন আগে থেকে সতর্কতামূলক আইসোলেশনে আছেন। সে পরিস্থিতিতে ওআইসির অনুষ্ঠানে যেতে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
এর আগে ২০১২ সালে ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে পাকিস্তান সফর করেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী। তারও আগে ২০১০ সালে দ্বিপক্ষীয় পঞ্চম পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে যোগ দিতে পাকিস্তান যান তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব মিজারুল কায়েস।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংসতার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা, সম্পদের বাটোয়ারা ও আটকে পড়া পাকিস্তানিদের ফেরত নেয়ার প্রসঙ্গ ওঠায় দুই দেশের সম্পর্ক মজবুত হয়নি। অনেকটা কূটনৈতিক সীমানাতেই বন্দি সম্পর্ক।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যায় এবং একাধিক যুদ্ধাপরাধীর অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। এর বিরুদ্ধে পাকিস্তান সরকার এবং কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সংসদ বিবৃতি দিলে তীব্র প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ।
পাকিস্তানে ইমরান খান ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ২০১৯ ও ২০২০ সালে দুই দফা টেলিফোন করেন।
চলতি বছরের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব শতবর্ষ অনুষ্ঠানে ইমরান খানের একটি শুভেচ্ছা বক্তব্য পড়ে শোনানো হয়।