বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সেই সার্জেন্টের বাবার বিরুদ্ধে জিডি বিচারপতির ছেলের

  •    
  • ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১ ২১:৪৩

বিচারপতির ছেলে সাঈদ হাসান বলেন, ‘আমার গাড়িটি মোটরসাইকেলকে চাপা দেয়নি বা পেছন থেকে ধাক্কা দেয়নি। বেআইনিভাবে উল্টোদিক থেকে ইউলুপে ঢুকে মোটরসাইকেলের আরোহী বরং আমার গাড়ির বাম পাশের হেডলাইট বরাবর লাগিয়ে দেন। এতে আমি প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনার সম্মুখীন হই।’

গাড়িচাপায় মারাত্মক জখম বিজিবির অবসরপ্রাপ্ত সদস্য মনোরঞ্জন হাজংকে দায়ী করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন গাড়ির চালকের আসনে থাকা বিচারপতির ছেলে সাঈদ হাসান।

দুর্ঘটনার ১২ দিন পর ১৪ ডিসেম্বর তিনি জিডি করেন বলে তথ্য নিশ্চিত করেছেন বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আলমগীর গাজী।

জিডিতে সাঈদ হাসান দাবি করেন, মনোরঞ্জন হাজং মোটরসাইকেল নিয়ে উল্টোপথে যাচ্ছিলেন। আর সে কারণেই দুর্ঘটনা ঘটে।

মনোরঞ্জন হাজং আহত হওয়ার ঘটনায় তার মেয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সার্জেন্ট মহুয়া হাজং বনানী থানায় মামলা করতে গেলে তা নেয়া হয়নি। তীব্র সমালোচনার মধ্যে ঘটনার দুই সপ্তাহ পর গত বৃহস্পতিবার মামলাটি নেয় পুলিশ। সড়ক পরিবহন আইনের ৯৮ ও ১২৫ ধারায় এই মামলায় গাড়ির চালকসহ অজ্ঞাতপরিচয় তিনজনকে আসামি করা হয়। অন্যদিকে মামলার দুদিন আগেই নেয়া হয় অভিযুক্ত গাড়িচালকের জিডি।

আলোচিত এ ঘটনা সম্পর্কে সাঈদ হাসান জিডিতে উল্লেখ করেন, তিনি ২ ডিসেম্বর রাত ২টার দিকে কামাল আতাতুর্ক সড়ক হয়ে গাড়ি নিয়ে কাকলী চৌরাস্তায় বামে টার্ন নেন। এরপর ডিভাইডারের পূর্ব পাশের ওয়ানওয়ে ধরে চেয়ারম্যানবাড়ীর ইউলুপে পৌঁছেন। গাড়িটি যখন দ্বিতীয় ইউলুপে ঢুকবে তখন একই ইউলুপের উল্টো দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেল সামনে পড়ে যায়। মোটরসাইকেলটি তার গাড়ির বনেটের বাম পাশের হেডলাইট বরাবর ধাক্কা খায়। এই দুর্ঘটনার ফলে বিএমডব্লিউ গাড়িটি ইউলুপের প্রাচীরে লেগে যায়।

জিডিতে আরো বলা হয়, ‘আমার গাড়িটি মোটরসাইকেলকে চাপা দেয়নি বা পেছন থেকে ধাক্কা দেয়নি। বেআইনিভাবে উল্টো দিক থেকে ইউলুপে ঢুকে মোটরসাইকেলের আরোহী বরং আমার গাড়ির বাম পাশের হেডলাইট বরাবর লাগিয়ে দেন। এতে আমি প্রাণহানির মতো দুর্ঘটনার সম্মুখীন হই।’

তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর সার্জেন্ট মহুয়ার বাবা মনোরঞ্জন হাজংয়ের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন। একাধিকবার পর্যাপ্ত আর্থিক সহযোগিতাও করেছেন।

এদিকে দুর্ঘটনায় আহত মনোরঞ্জন হাজংয়ের ডান পা কেটে ফেলতে হয়েছে। বাম পা-ও ক্ষতিগ্রস্ত। তাকে প্রথমে পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও পরে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে আইসিইউতে আছেন।

মনোরঞ্জন হাজং আহত হওয়ার পর তার মেয়ে মহুয়া ঘটনার পরদিনই মামলার আবেদন করেন। কিন্তু মামলাটি নেয়নি বনানী থানা। পুলিশ তখন বলেছিল, তদন্ত শেষে মামলা নেয়া হবে। এরপর প্রায় দু'সপ্তাহেও মামলা না নেয়া হলে বিষয়টি নিয়ে পুলিশের ভেতরেই সমালোচনা শুরু হয়। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা চলতে থাকে।

বিলম্বে মামলা নেয়ার বিষয়ে উপ-কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ঘটনার পরই আমরা অভিযোগ পেয়েছি। কিন্তু যাচাই করার প্রয়োজন ছিল। আমরা যাচাই-বাছাই করে মামলা নিয়েছি। আমরা আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজগুলো বিশ্লেষণ করেছি।‘মধ্যরাতে মনোরঞ্জন হাজং মোটরসাইকেল নিয়ে উল্টোপথে এসে চেয়ারম্যানবাড়ির ইউলুপে থামেন। তিনি দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একটি গাড়ি ধাক্কা দেয় বলে জেনেছি। এরপর আমরা মামলা নিয়েছি।’

স্বজনরা জানান, মনোরঞ্জন আগে থেকেই হার্টের রোগী। দুর্ঘটনার ধকল তিনি নিতে পারছেন না। এজন্য তাকে আইসিইউতে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

দুর্ঘটনার পর প্রাইভেট কারের চালককে আটক করা হলেও পরে তাকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। মহুয়া হাজং তার মামলার আবেদনে সেই যুবকের নাম উল্লেখ করার পর তাকে নামটি কেটে ফেলার পরামর্শ দেয়া হয় থানা থেকে। কিন্তু মহুয়া তাতে রাজি ছিলেন না। শেষ পর্যন্ত কারও নাম ছাড়াই মামলাটি করা হয় বলে জানান মহুয়া।

এ বিভাগের আরো খবর