ঠাকুরগাঁওয়ে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্বে নিজ বাড়িতে হামলার শিকার হয়েছেন এক বৃদ্ধা।
শুক্রবার রাতে সদর উপজেলার ২০ নম্বর রুহিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের কড়ালিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
কাঁদতে কাঁদতে শনিবার নিউজবাংলাকে ওই ঘটনার বর্ণনা দেন ৭০ বছর বয়সী গোলাপী বেওয়া। বলেন, ‘মিটিংটা শেষ করে মুই চেয়ারলা জড়াছিনু। একখান চেয়ারের পর আরেকখান চেয়ার রাখিছু ওমনি গুন্ডালা বাড়িত ঢুকেহেনে এলোপাতাড়ি চেয়ার, টেবিল আর বাড়ির বেড়ালা ভাঙ্গিবা ধরিচে।
‘মুই আটকাবা যাহেনে মোক ধাক্কা দে ফেলায় দিল। আর ওমনি মোর কোমরটাত চেয়ারলা দেহেনে মারে তিনখান চেয়ার ভাঙ্গিল গে বাপু। মুই এলা বেড়াবা পারু না।’
হামলায় বৃদ্ধার পরিবারের আরও তিন সদস্য আহত হয়েছেন। তারা হলেন তার দুই ছেলে আলাল ও দুলাল এবং নাতনি অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী জেলি আক্তার।
বৃদ্ধার বড় ছেলে আলাল বলেন, ‘আমার বাসায় আনারস প্রতীকে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আনসারুলের নির্বাচনি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। এর আগে আমাকে নৌকার প্রার্থীর লোকজন হুমকি দিয়ে আসছিলেন, যেন বৈঠক না করা হয়। তাদের নিষেধ অমান্য করে বৈঠক করায় আমার মা-সন্তান-ভাইসহ সবাইকে হামলার শিকার হতে হলো। প্রার্থীরা তো ভোটারের সঙ্গে বৈঠক করতেই পারে।’
আহত স্কুলছাত্রী জেলি আক্তার বলে, ‘ওরা আমাকেও ছাড় দেয়নি। আমাকে দরজার সঙ্গে ধাক্কা দিলে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। আর কিছু বলতে পারব না।’
স্থানীয়রা জানায়, আনসারুল বৈঠক শেষ করে সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার পর নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অনিল কুমার সেনের ৪০ থেকে ৫০ সমর্থক এসে অতর্কিত হামলা চালান। তারা নারী-শিশুসহ আরও ১০ জনকে মারধর করে এবং চেয়ারসহ ঘরের আসবাপপত্র ভাঙচুর করে।
এ বিষয়ে জানতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অনিল কুমার সেনের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এটাকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন।
রুহিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চিত্ত রঞ্জন রায় বলেন, ‘হামলার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ সেখানে যায়। গিয়ে দেখে, চেয়ার ভাঙচুর করা হয়েছে। কে বা কারা এমন হামলা চালিয়েছে, তা খুঁজে বের করতে অভিযান চলছে। কোনো লিখিত অভিযোগ পেলে এবং তদন্তসাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে হামলার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আনছারুল হক। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।