ফরিদপুরে খালে বাঁধ দিয়ে রেললাইনের কাজ করায় আটকা পড়েছে পানি। এতে নগরকান্দা ও সালথা উপজেলায় কয়েক হাজার একর জমির পেঁয়াজের আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
এমন প্রেক্ষাপটে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। যতদ্রুত সম্ভব খালের বাঁধ অপসারণ করে জমি পেঁয়াজ চাষের উপযোগী করার দাবি তাদের।
জানা গেছে, নগরকান্দা ও সালথার মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে রাইনের খাল। এই খাল দিয়ে দুই উপজেলার কয়েকটি বিলের পানি কুমার নদে গিয়ে পড়ে। তবে বেশ কিছুদিন ধরে নগরকান্দার গজারিয়া এলাকায় আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে রেললাইনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাক চলাচল করছে।
এ অবস্থায় ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদের সময় অতিবর্ষণের পানি বাঁধের উজানে আটকে পড়েছে। বাঁধ থাকায় এই পানি সরছে না। এতে পেঁয়াজসহ মৌসুমি ফসল আবাদ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা বলছে, পেঁয়াজ চাষের জন্য খ্যাত নগরকান্দা ও সালথা উপজেলায় অগ্রহায়ণ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে পৌষের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলে পেঁয়াজের আবাদ। কিন্তু পানি নিষ্কাশন না হওয়ায় চাষিরা এখনও আবাদ শুরু করতে পারেননি।
সরেজমিন দেখা গেছে, বাঁধের দুই পাশে পানির উচ্চতার ব্যবধান তিন-চার ফুট। পানি নিষ্কাশনের জন্য বাঁধের মাঝে দুটি পাইপ দেয়া হয়েছে। কিন্তু পাইপ দিয়ে যে পরিমাণে পানি বের হচ্ছে তাতে দুপাশ সমতল হতে প্রায় এক মাস সময় লাগবে। তাই এলাকার কৃষকদের দাবি, বাঁধটি দু-এক দিনের মধ্যে খুলে দেয়ার।
নগরকান্দার দফা গ্রামের পেঁয়াজ চাষি দাউদ মল্লিক বলেন, ‘যে পেঁয়াজ আবাদ করব, তার মধ্যে তিন একর জমি এখনও দুই ফুট পানির নিচে। কবে এই জমি শুকাবে আর কবে পেঁয়াজের আবাদ করব।’
শুধু দাউদ মল্লিকই নয়, এমন অভিযোগ আরও অনেক চাষির।
স্থানীয় পুরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান বাবু ফকির বলেন, ‘এই বাঁধের কারণে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি পানির নিচে। এতে কৃষকরা সর্বশান্ত হয়ে যাবেন। তাই প্রশাসনের প্রতি আবেদন দু-এক দিনের মধ্যে বাঁধটি কেটে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি।’
সংশ্লিষ্ট রেল লিংক প্রকল্পের ম্যানেজার চীনের নাগরিক মি. থানের দোভাষী ইব্রাহীম খলিল ইমন বলেন, ‘পানি নিষ্কাশনের জন্য বাঁধের মাঝে দেড় মিটার প্রশস্ত দুটি পাইপ দেয়া হয়েছে। তার পরও যদি স্থানীয়রা মনে করেন আরও বেশি পানি নিষ্কাশন প্রয়োজন, তাহলে তারা বাঁধ কেটে দিতে পারেন। আমরা পরে ভরাট করে নেব।’