বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি রাশেদ চৌধুরীকে আশ্রয় দেয়া যুক্তরাষ্ট্র আবার মানবতার কথা বলছে-এমন মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শনিবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস নিয়ে এক আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সম্প্রতি মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বর্তমান ও সাবেক শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘তারা তো রাশেদ চৌধুরীকে আটকে রেখেছে। দেয় না। একটা খুনিকে রেখে আবার মানবতার কথা বলে। যে মানবতা লঙ্ঘন করল, মানুষ মেরে ফেলল তাকে আশ্রয় দিয়ে রাখে; এটা তো ঠিক না।’
এদিকে গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কমেছে।
রিপোর্টের একটি অংশে বলা হয়েছে, পুলিশের বিশেষ দুই ইউনিট র্যাব ও সিটিটিসিইউর কার্যক্রমে সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সিটিটিসিইউ ও র্যাব বিদেশের সঙ্গে যুক্ত জঙ্গি বা সন্ত্রাসীদের (ফরেন টেরোরিস্ট ফাইটার-এফটিএফ) গ্রেপ্তার বা তাদের বিষয়ে অনুসন্ধানে আমূল সংস্কার ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকা যে রিপোর্টটা দিয়েছে এটাই বাস্তব। আমি যখন আমেরিকার সেক্রেটারি অব স্টেটের সঙ্গে আলাপ করি, ওনাকে বলেছি যে আমাদের দেশের যে র্যাব, এটা অত্যন্ত দক্ষ। এ কারণেই আমাদের এখানে সন্ত্রাস কমেছে, ড্রাগ ট্রাফিকিং মোটামুটি কনট্রোলে আছে। হিউম্যান ট্রাফিকিং অনেক কমেছে।
‘আমি বলেছি- তোমাদের যে গ্লোবাল পলিসি, তোমরা টেরোরিজম বন্ধ করতে চাও। তোমরা ড্রাগ, হিউম্যান ট্রাফিকিং কমাতে চাও। র্যাব এগুলো নিয়েই কাজ করছে। তারপরও তোমরা এটা করেছ। এটা দেশবাসী গ্রহণ করে না।
‘আমি বলেছি যে র্যাব একমাত্র প্রতিষ্ঠান যেটাতে মানুষের আস্থা আছে, বিশ্বাস আছে। কারণ হলো তারা সহজে পয়সায় বিক্রি হয় না। র্যাব এমন একটি প্রতিষ্ঠান যারা দেশের ভালোর জন্য কাজ করছে। নিরাপত্তা বাড়াচ্ছে, হিউম্যান রাইটস প্রটেক্ট করছে। একে তোমাদের এভাবে ট্রিট করা ঠিক হয়নি।’
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘উনি (সেক্রেটারি অব স্টেট) অবশ্য আমাকে বলেছেন যে ওনাদের কংগ্রেস মানে আইনপ্রণেতারা অনেকটা বাধ্য করেছেন এটা করতে। তারপরও উনি বলেছেন- আমরা আলোচনা করবো। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের বহু কিছু ডায়ালগ আছে, আলোচনার সুযোগ আছে। আমার ভালো লেগেছে যে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে আমরা অসন্তুষ্ট।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের তথ্যমতেই প্রতিবছর সে দেশে ছয় লাখ মানুষ মিসিং হয়। পুলিশ ইন দ্য লাইন অব ডিউটি হাজারখানেক লোক মেরে ফেলে। আর আমাদের এখানে কালেভদ্রে কেউ মারা গেলেই বলবে যে এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিং। আপনারাই (সাংবাদিক) এসবের আসল মাতব্বর। আপনারাই বলেন বিনাবিচারে হত্যা, আর ওরা বলে ইন দ্য লাইন অব ডিউটি। সবাইকে আরো একটু সচেতন হতে হবে।