ভালোবাসার মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে স্বজনকে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করেছেন এক তরুণী। মা-বাবার নিষেধাজ্ঞার মুখে প্রেমিককে নিজের করে পেতে অসুস্থতার ভান করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। হাসপাতালে দুদিন কাটার পর চিকিৎসকের মধ্যস্থতায় নিজের পছন্দের ছেলেকেই জীবনসঙ্গী হিসেবে পেয়ে গেছেন তৈরি পোশাক কারখানার ওই কর্মী।
নারায়ণগঞ্জ সদরের সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন শিমরাইল এলাকায় ‘মা মেডিকেল’ নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে বৃহস্পতিবার রাতে।
ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখেছেন ওই হাসপাতালের রিসিপশনিস্ট মোহাম্মদ সোহাগ। তিনি জানান, সিদ্ধিরগঞ্জের আটি হাউজিং এলাকার মো. ইউসুফের মেয়ে খাদিজা বুধবার দুপুরে বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে আসেন। সঙ্গে ছিলেন তার মা-বাবা।
বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত খাদিজারের শারীরিক সমস্যা খুঁজে পাননি চিকিৎসক। একপর্যায়ে চিকিৎসক বুঝতে পারেন যে কোনো কারণে খাদিজা অসুস্থতার ভান করছেন। তখন তিনি ওই তরুণীর সঙ্গে একান্তে কথা বলেন। একপর্যায়ে তরুণী বলেন যে ওয়ালীউল্লাহ নামে এক তরুণকে তিনি ভালোবাসেন। ওই তরুণও একই তৈরি পোশাক কারখানার কর্মী। কিন্তু অভিভাবকরা ওই সম্পর্ক মানতে নারাজ। তারা অন্যত্র তার বিয়ে ঠিক করেছেন। অন্যত্র বিয়ে ঠেকাতেই তিনি অসুস্থতার ভান করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
তরুণীর কাছ থেকে এমন কথা শোনার পরও তার শারীরিক অবস্থার বিষয়টি নিশ্চিত হতে ওই চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে হার্টের কয়েকটি পরীক্ষা করান। রিপোর্টে সবকিছু স্বাভাবিক এলে তিনি নিশ্চিত হন যে ওই তরুণী অসুস্থ নন।
ডা. মাহফুজ পরে ওই তরুণকে ফোন করে খাদিজা অসুস্থ জানিয়ে তাকে হাসপাতালে আসতে বলেন। ওই তরুণ হাসপাতালে এলে তরুণীর বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ওদিকে খাদিজাও তার সিদ্ধান্তে অনড়। একপর্যায়ে চিকিৎসক বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনার পরামর্শ দিলে তরুণীর অভিভাবকরা নমনীয় হন।
চিকিৎসক ডা. মাহফুজুর রহমান নিউজবাংলাকে জানান, মেয়েটির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ওই ছেলেকে হাসপাতালে তাদের মুখোমুখি করার পর মেয়েটির অভিভাবকরা এই সম্পর্ক মেনে নেন। এরপর সন্ধ্যায় হাসপাতালেই ওদের বিয়ে পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়।
হাসপাতালের সব চিকিৎসক, নার্স ও অন্য কর্মীদের সহযোগিতায় ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী ওই প্রেমিক-প্রেমিকার বিয়ে সম্পন্ন হয়।