ভোলার লালমোহনে মুজিববর্ষ ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে মহান বিজয় দিবস-২০২১ উপলক্ষে দেয়া সম্মাননা স্মারকে ‘মুজিববর্ষ’র পরিবর্তে ‘মুবিজবর্ষ’ লেখায় সমালোচনা শুরু হয়েছে।
বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তির মতো বিশাল এই আয়োজনে এ ধরনের ভুল হওয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা ধরনের মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা। তবে বিষয়টিকে ‘প্রিন্টিং মিসটেক’ হিসেবে দাবি করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পল্লব কুমার হাজরা।
মুজিববর্ষ ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে লালমোহন উপজেলা প্রশাসন স্কুল, কলেজ, মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থাকে বিশেষ ভূমিকা পালনের জন্য সম্মাননা স্মারক দেয়।
স্মারকের মূল লেখায় ‘মুজিববর্ষ’র পরিবর্তে ‘মুবিজবর্ষ’ ছাপা হয়েছে।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পল্লব কুমার হাজরা বলেন, ‘সম্মাননা স্মারকগুলো উন্নত মানের করার জন্য বরিশালের একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তারা কীভাবে করবে তার নির্দেশনাও সঠিক সময়ে দেয়া হয়েছে। এর পরও তারা ভুল করেছে। এ জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত বরিশালের প্রতিষ্ঠান বিপ্রকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া যেসব জায়গায় এ সম্মাননা বিতরণ করা হয়েছে, সেগুলো তুলে নিয়ে সংশোধন করে নতুনভাবে বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল হক অনু বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নাম বিকৃত করা অন্যায়। সেটা ইচ্ছায়ই হোক আর অনিচ্ছায়ই হোক। যারা এ ধরনের অন্যায় করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া দরকার।’
তিনি বলেন, ‘যদি আজ কোনো স্কুলের শিক্ষক বা অফিসের ছোট কর্মকর্তা কিংবা সাধারণ কর্মচারী বা অন্য কেউ যদি এ ধরনের অপরাধ করতেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই আইনি ব্যবস্থা নেয়া হতো। তাহলে এখানে কেন নেয়া হবে না?’
ভোলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শেখ মুজিব বাঙালির একটি আবেগের নাম। সেই নাম লিখতে গিয়ে যারা ভুল করেন, তারা আসলেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি অনুরক্ত নন। তারা মুজিববর্ষ ও সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এ ধরনের ভুল করেন। যারা বঙ্গবন্ধুর নামকে ব্যঙ্গাত্মক করে ভুল লেখে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
দৈনিক আজকের ভোলার সহযোগী সম্পাদক এম শাহরিয়ার জিলন বলেন, ‘ভোলার লালমোহনে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে মুজিববর্ষ ও সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে স্কুল, কলেজ ও বিভিন্ন ব্যক্তিদের সম্মাননা স্মারক দেয়া হয়। ওই স্মারকে ‘মুজিববর্ষ’র পরিবর্তে ‘মুবিজবর্ষ’ লেখা হয়। বিষয়টি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে আমাদের নজরে আসে। বঙ্গবন্ধুর নামে এই ভুল নিয়ে মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।’
তিনি বলেন, ‘বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেয়া সম্মাননা স্মারকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এত বড় ভুল কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়। যারা এই ভুল করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিলে আর কেউ এ ধরনের ভুল করতে সাহস করবে না।’