বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চড় মারার অভিযোগে পৌরসভার মেয়র শাহনেওয়াজ শাহানশাহের নামে মামলা হয়েছে।
শিক্ষা কর্মকর্তা মেহের উল্লাহ দেওয়ানগঞ্জ মডেল থানায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে মামলাটি করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘শিক্ষা কর্মকর্তা বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে দায়িত্বপালন করছিলেন। এ সময় মেয়র প্রকাশ্যে ওই শিক্ষা কর্মকর্তাকে গালিগালাজ করেন এবং তাকে দুটি থাপ্পড় মারেন। এমন অভিযোগ এনে মেয়রকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।’
শিক্ষা কর্মকর্তা মেহের উল্লাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পুরো ঘটনাটি আমি সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। জেলা প্রশাসক মহোদয়কেও জানিয়েছি। জেলা প্রশাসক আমাকে থানায় মামলা করার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী আমি থানায় মামলা দিয়েছি। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।
‘আশা করছি দ্রুত আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
যা হয়েছিল বিজয়ের অনুষ্ঠানে
মেহের উল্লাহ নিউজবাংলাকে জানান, সকাল পৌনে ৭টার দিকে দেওয়ানগঞ্জ শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা করছিলেন তিনি। উপজেলা প্রশাসন নির্ধারিত তালিকা অনুযায়ী তিনি একে একে সংশ্লিষ্টদের ডাকছিলেন।
মেহের জানান, তালিকার এক নম্বরে ছিল উপজেলা চেয়ারম্যানের নাম। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), দেওয়ানগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), উপজেলা আওয়ামী লীগ ও পৌরসভার মেয়রকে ডাকা হয়।
মেয়র শাহানশাহ্ শ্রদ্ধা জানানো শেষে তাকে বলেন, ‘আমি ৫ নম্বরে কেন? আমি তো ১ নম্বরে যামু’। মেহেরের অভিযোগ, এ কথা বলেই মেয়র তাকে চড় মেরে দ্রুত শহীদ মিনার এলাকা ছাড়েন।
এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন্নাহার শেফা বলেন, ‘শিক্ষা কর্মকর্তা উপস্থাপনা করার সময় আমি শহীদ মিনারের বেদিতে ছিলাম। নাম ঘোষণার সিরিয়াল নিয়ে মেয়র তাকে লাঞ্ছিত করেছেন।’
এটিকে দুঃখজনক মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘একজন মেয়র সরকারি কর্মকর্তার গায়ে এভাবে হাত তুলতে পারেন না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে শাহনেওয়াজ শাহানশাহের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তা ধরেননি। নিউজবাংলার পরিচয় দিয়ে এসএমএস দিলেও কোনো সারা দেননি।