বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উদযাপিত হচ্ছে সারা দেশে। সরকারি ছুটি থাকায় অফিস-আদালত বন্ধ। সঙ্গে আছে শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি। টানা তিন দিনের ছুটির আমেজে রাজধানীবাসী। টানা ছুটির সুযোগ নিয়ে অনেকে ছেড়ে গেছেন রাজধানী। ফাঁকা হয়ে পড়েছে নগর।
সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দিনভর রাজধানীতে রয়েছে নানা আয়োজন। সকাল থেকেই গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোয় নিয়ন্ত্রিত রয়েছে যান চলাচল। এতে নগরীর সড়কজুড়ে যানজট তৈরির যে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তার দেখা মেলেনি। উল্টো দেখা গেছে ছুটির আমেজ।
যানবাহন ও মানুষের চলাচল অন্য যেকোনো দিনের তুলনায় কম। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সকাল থেকে নগরবাসীকে রাস্তায় বের হতে দেখা যায়নি। তবে দুপুর গড়িয়ে বিকেলে মানুষের চলাচল কিছুটা বেড়েছে। বিজয়ের মাইলফলককে স্মরণীয় করতে অনেকেই প্রিয়জন নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছেন। এতেও সড়কে খুব একটা বাড়তি চাপ পড়েনি বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ।
ট্রাফিক মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, জাতীয় স্মৃতিসৌধ বাদে অন্য অনুষ্ঠানগুলো হয়েছে তেজগাঁও এলাকায়। সে কারণে ডাইভারশনগুলোও ওইদিকে। ডাইভারশনের কারণে মিরপুরে কোনো সমস্যা হয়নি। যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। সরকারি ছুটি থাকায় মানুষজন রাস্তায় কম বের হয়েছে।
মগবাজার, শাহবাগ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকা সকাল থেকে অনেকটা ফাঁকা ছিল বলে জানিয়েছেন রমনা ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার জয়দেব চৌধুরী। বেলা ৩টার দিকে তিনি বলেন, ‘স্বাভাবিক দিনের তুলনায় আজকে যানবাহনের চলাচল কম। মানুষজন খুব একটা বের হয়নি। সকালে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ঘিরে কিছুটা চাপ ছিল। বেলা বাড়ার পর তা কমে গেছে। পুরো এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক।’
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর, জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ড ঘিরে নানা আনুষ্ঠানিকতা ছিল। বিকেল থেকে জাতীয় সংসদ ভবন ও গণভবন এলাকা ঘিরে রয়েছে নানা আয়োজন।
সকালের আয়োজনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সফররত ভারতের রাষ্ট্রপতিসহ রামনাথ কোবিন্দসহ দেশি-বিদেশি অতিথিরা অংশ নেন। বিকেলের কর্মসূচিতেও তারা উপস্থিত ছিলেন।
তাদের নির্বিঘ্ন চলাচল এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অনুষ্ঠানস্থল ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয় বলে জানিয়েছে ডিএমপি।
বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত রাজধানীর ২১টি পয়েন্টে ডাইভারশন ছিল। বেলা ১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ১২টি পয়েন্টে ডাইভারশন রয়েছে। এই পয়েন্টগুলো থেকে অনুষ্ঠানে আসা যানবাহন ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি অনুষ্ঠানস্থলের দিকে যেতে পারছে না।
দুপুর থেকে ১২ পয়েন্টে ডাইভারশন
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় মুজিব শতবর্ষ ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠান ঘিরে সংসদ ভবন ও আশপাশের ১২টি পয়েন্টে বেলা ১টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ট্রাফিক পুলিশের ডাইভারশন থাকবে।
পয়েন্টগুলো হলো: ফার্মগেট ক্রসিং, বিজয় সরণি, উড়োজাহাজ ক্রসিং, খেজুরবাগান ক্রসিং, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পূর্ব প্রান্ত, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পশ্চিম প্রান্ত, ধানমন্ডি ২৭ নম্বর পূর্ব মাথা, আড়ং ক্রসিং, আসাদগেট, গণভবন ক্রসিং, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গ্যাপ ও সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল গ্যাপ।
ডিএমপির তেজগাঁও (ট্রাফিক) বিভাগের উপকমিশনার সাহেদ আল মাসুদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ডাইভারশন পয়েন্ট থেকে নির্ধারিত স্টিকার ছাড়া কোনো গাড়ি অনুষ্ঠানস্থলের দিকে যেতে দেয়া হচ্ছে না। তবে অ্যাম্বুলেন্সের মতো জরুরি যান চলাচলের অনুমতি রয়েছে।‘
ডাইভারশন পয়েন্টগুলোর ভেতরে যেসব বাসাবাড়ি আছে, সেগুলোর বাসিন্দাদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বের না হওয়ার অনুরোধ করেন ডিএমপির এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘এবার অনুষ্ঠান অনেক বড় পরিসরে হচ্ছে। এর জন্য সাধারণ মানুষের কিছুটা দুর্ভোগ হবে। বৃহৎ স্বার্থে এই দুর্ভোগটুকু মেনে নেয়ার অনুরোধ থাকছে।’