পথে পথে মানুষের ঢল। কেউ একা, কেউ দল বেঁধে, আবার কেউ কেউ যাচ্ছেন মিছিল নিয়ে। কারও হাতে ফুল, কারও হাতে পতাকা। সবার গন্তব্য শহীদ মিনার।
বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বাড়ি, মার্কেটে উড়ছে লাল-সবুজ পতাকা। যানবাহনগুলোও সামনে পতাকা উড়িয়ে চলছে।
মোড়ে মোড়ে বাজছে ৭ মার্চের ভাষণ; ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।’ কোথাও বাজছে দেশাত্মবোধক নানা গান।
সারা দেশের মানুষ নানাভাবে বৃহস্পতিবার বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে। সবাই নিজেদের মতো করে বিজয়ের ৫০ বছরের স্বাদ নিচ্ছে।
কোথাও কোথাও দেখা যায়, পিকআপ ভ্যানে জোরে গান বাজিয়ে, গানের তালে নেচে তরুণরা সারা পাড়া ঘুরছে। এতে অনেকেই বিরক্ত হলেও তরুণদের সেদিকে কোনো খেয়াল নেই। তারা আছে তাদের উদযাপন নিয়ে।
সকাল থেকেই সিলেট নগরের চৌহাট্টা এলাকার শহীদ মিনারে মানুষের উপচেপড়া ভিড়। সম্মিলিত নাট্য পরিষদের আয়োজনে শুরু হয় পুষ্পস্তবক অর্পণ অনুষ্ঠান। নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শহীদদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক রজতকান্তি গুপ্ত বলেন, ‘বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীতে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, রক্তদান কর্মসূচি, আলোকচিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।’
বাবার হাত ধরে শহীদ মিনারে আসে স্কুলছাত্র অরূপ চৌধুরী। অরূপের হাতে দুটি গোলাপ।
ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী অরূপ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের জন্য ফাইট করে মারা গেছেন, তাদের জন্য ফুল নিয়ে এসেছি।’
ফুল দিতে গিয়ে সিলেট মহানগর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ভবতোষ রায় বর্মণ রানা বলেন, ‘যুদ্ধ করে যে দেশকে স্বাধীন করেছি, সেই দেশের ৫০ বছর পূর্তি দেখে যেতে পেরে সত্যিই অনেক আনন্দ হচ্ছে।
‘এই ৫০ বছরে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। আমরা অর্থনীতিতে এগিয়েছি। মানুষের জীবনমানে পরিবর্তন এসেছে। তবে সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদও মনে হয় বেড়েছে। রাজনৈতিক মতভেদও অনেক উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
সকালে সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয় কুচকাওয়াজ ও শিশু-কিশোরদের ডিসপ্লে প্রদর্শনী। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেয়।
সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারকে দেয়া হয় সংবর্ধনা।