বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনা না করে র্যাব এবং বাহিনীর বর্তমান-সাবেক কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশিরা পছন্দ করেনি বলে ওয়াশিংটনকে জানিয়েছে ঢাকা।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপের সময় এ কথা বলেছেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে ফোনালাপের বিষয়টি তুলে ধরে মোমেন বলেন, র্যাবের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে আলোচনার দরজা খোলা আছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে খুবই উষ্ণ আলোচনা হয়েছে। তার সঙ্গে অনেকক্ষণ আলোচনা হয়েছে। তারা এমন এক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা দেশবাসী গ্রহণ করেনি। এ সিদ্ধান্ত আলোচনার মাধ্যমে না নেয়ায় এটি আমরা পছন্দ করিনি।
‘যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদকের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা খুবই দুঃখজনক।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সব সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। এ ইস্যুতে ঢাকা-ওয়াশিংটনের মধ্যে সস্পর্কের কোনো প্রভাব পড়বে না।’
তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর ৬ লাখ লোক মিসিং হয়। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশে ৬ হাজার লোক মিসিং হয়েছে। অন্যদিকে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশ বিচার-বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে হাজার লোক মেরে ফেলে। যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল পলিসি হলো সন্ত্রাস দমন।
‘সন্ত্রাস দমনে র্যাব অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। শুধু তাই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের গ্লোবাল ইস্যু মাদক পাচার বন্ধে র্যাব সাহায্য করছে। র্যাব দুর্নীতিপরায়ণ নয়। টাকা-পয়সা দিয়ে র্যাবের অবস্থা পরিবর্তন করা যায় না। ফলে তারা বাংলাদেশের জনগণের আস্থা অর্জন করেছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মোমেন আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এত বড় সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের সঙ্গে কথাবার্তা না বলে নেয়া ঠিক হয়নি। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক দেশ। আমাদের সঙ্গে অনেক ডায়ালগ আছে। সেখানে আমরা কথা বলব।’
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে র্যাব ও বাহিনীটির কর্মকর্তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও পুলিশের বর্তমান মহাপরিদর্শক তথা আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মুস্তফা সরওয়ার, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও আনোয়ার লতিফ খান এবং বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ।