জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে দেশের স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগন বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজুস) নতুন কমিটি।
বুধবার রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে সংগঠনটির ৩৫ সদস্যের নতুন কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২১- ২০২৩ মেয়াদের দায়িত্ব গ্রহণ করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন।
বাজুসের নতুন সভাপতি দেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্প গ্রুপ বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের নেতৃত্বে নতুন কমিটি বিদায়ী সভাপতি এনামুল হক খান দোলনের কাছ থেকে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
বাজুসের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পুনরায় দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দিলিপ কুমার আগরওয়ালা।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চলনা করেন বাজুসের নতুন কমিটির সহসভাপতি দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা এখন বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তির প্রাক্কালে। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের সুযোগ্য কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা স্বল্প আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। অনেক মহাঘটনার সাল ২০২১। এই ২০২১ সালেই বাজুসের দায়িত্ব গ্রহন করলেন সায়েম সোবহান আনভীর।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের মাথাপিছু আয় বেড়ে এখন ২ হাজার ৫৫৪ ডলারে উঠেছে। ২০৪১ সালে এই আয় সাড়ে ১২ হাজার ডলার হলে জুয়েলারী মার্কেটও বড় হবে। মানুষের আয় যখন বেশি হবে তখন খরচও বেশি হবে। জুয়েলারির বাজারও বড় হবে।’
‘দেশে জুয়েলারি শিল্পে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতে পারে। অনেক রাজস্ব আয় হতে পারে। ভারত এখন ৩ শতাংশ ভ্যাট নিচ্ছে, অথচ আমাদের দেশে ৫ শতাংশ। এটা হতে পারে না। আমি আশা করবো বাজুসের সঙ্গে এ সব বিষয়ে এফবিসিসিআই নিবিড়ভাবে কাজ করবে। যেসব খাত থেকে রপ্তানি ও কর্মসংস্থান হবে সেসব সেক্টরের সঙ্গে কাজ করতে চায় এফবিসিসিআই। আমার লক্ষ্য হলো ব্যবসা, রপ্তানি ও কর্মসংস্থান বাড়ানো।’
বাজুসের নতুন সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দিত আমাকে সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করার জন্য। সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাই। আমি আশা করবো আমরা সবাই, নতুন যে কমিটি হয়েছে- একত্রিত হয়ে এই শিল্পটাকে আগামীতে উন্নত করার চেষ্টা করবো। আমি এ পর্যন্ত দেখেছি যে, জুয়েলারি শিল্পে শুধু আমদানিই করা হয়। এখনও আমরা রপ্তানির ক্ষেত্রে বিকাশ ঘটাতে পারিনি।
তিনি বলেন, ‘দেশে জুয়েলারি শিল্পের আরও প্রসার ও রপ্তানি ক্ষেত্রে বিকাশ ঘটাতে হবে। আমার মূলত লক্ষ্যটা থাকবে জুয়েলারি শিল্পের প্রসার। এক্ষেত্রে ভ্যাট ও কর সমস্যা চিহিৃত করে সমাধানের চেষ্টা করবো জুয়েলারি শিল্পের প্রসারের জন্য। জুয়েলারি শিল্পে আমরা রপ্তনিকারক দেশে পরিণত হতে চাই।’
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে বাজুসের বিদায়ী সভাপতি এনামুল হক খান দোলন বলেন, ‘আমার জীবনে যদি কোন ব্যর্থতা থাকে, তা বাজুসের নবনির্বাচিত সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীরের আগমনের মধ্যদিয়ে ঘুচে গেছে। আমি বিশ্বাস করি মানুষ আমাকে একদিন স্বরণ করবে এই বলে যে, সায়েম সোবহান আনভীরের মতো একজন মানুষের হাতে আমি দায়িত্ব হস্তান্তর করতে পেরেছি।’
‘আজ নতুন যারা এসেছেন, তাদের উৎসাহ দেওয়ার সময়। এই উৎসাহ বৃদ্ধি করাই আমাদের কাজ। বাজুসের মর্যাদা বাড়লে, আমাদেরও মর্যাদা বাড়বে।’
সাধারণ সম্পাদক দিলিপ কুমার আগরওয়ালা বলেন, ‘আমরা একটা পরিকল্পনা করেছি। আমরা সমস্যাগুলো চিহিৃত করেছি। সমস্যা সমাধানে আমরা কিছু স্টান্ডিং কমিটি করবো। আমাদের সমস্যা দেশবাসীকে জানাবো। পাশাপাশি সমস্যা সমাধানে কাজ করবো।’
গত ২৯ নভেম্বর বাজুস নির্বাচনের চুরান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। এতে বাজুস নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন রিহ্যাব সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল।