বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

টানা ছুটিতে ঠাঁই নেই কক্সবাজারে

  •    
  • ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ২১:৪৯

ঢাকা থেকে আসা সাইদুল ও রুমানা দম্পতি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ঘরবন্দি সময় গেছে করোনার কারণে। অনেক দিন পর খোলা আকাশ আর সমুদ্র একসঙ্গে দেখে খুবই ভালো লাগছে। তবে অগ্রিম বুকিং না দিয়ে আসায় হোটেলে রুম পেতে একটু কষ্ট হয়েছে। অনেক চেষ্টার পর অবশ্য পেয়েছি।’

দেশে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি বেশ নিয়ন্ত্রণে, আবহাওয়াও সুন্দর। অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও শেষ হয়েছে পরীক্ষা। তার সঙ্গে সাপ্তাহিক ও বিজয় দিবসের ছুটি মিলিয়ে পাওয়া গেছে টানা তিন দিন।

অবকাশ যাপনের এমন সুযোগে তাই কক্সবাজারে ভিড় করেছেন লক্ষাধিক পর্যটক। বুধবারই সমুদ্রসৈকতে দেখা গেছে প্রায় দুই লাখ পর্যটক। এ ছাড়া আগামী তিন দিনের জন্য কক্সবাজারের সাড়ে চার শতাধিক হোটেল-মোটেলের ৯৫ শতাংশ কক্ষেই আগাম বুকিং হয়ে গেছে।

বিজয় দিবসের এই ছুটিতে কক্সবাজারে এবারের মৌসুমের সর্বোচ্চ পর্যটক সমাগম হবে বলে আশা এ-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের। এতে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে।

হোটেল-মোটেল মালিক সমিতি পর্যটকদের সেবায় তদারকি বাড়িয়েছে। আর নজরদারি বাড়িয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

এমন প্রস্তুতির মধ্যেও অবশ্য পর্যটক হয়রানি বন্ধ করা যায়নি। এরই মধ্যে একাধিক স্থানে পর্যটকরা হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিভিন্ন আবাসিক হোটেল ও পরিবহন সংস্থাগুলো পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। হোটেল ও রেস্তোরাঁয় কয়েক গুণ বেশি টাকা আদায়ের অভিযোগও রয়েছে। এ ছাড়া হোটেলের কিছু কক্ষ আগাম বুকিং নিয়েছে কালোবাজারি একটি চক্র, যারা অতিরিক্ত ভাড়ায় এসব রুম ভাড়া দিচ্ছে।

ঢাকা থেকে আসা সাইদুল ও রুমানা দম্পতি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ঘরবন্দি সময় গেছে করোনার কারণে। অনেক দিন পর খোলা আকাশ আর সমুদ্র একসঙ্গে দেখে খুবই ভালো লাগছে। তবে অগ্রিম বুকিং না দিয়ে আসায় হোটেলে রুম পেতে একটু কষ্ট হয়েছে। অনেক চেষ্টার পর অবশ্য পেয়েছি।’

মা-বাবার সঙ্গে কুমিল্লা থেকে সমুদ্র দেখতে এসেছে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তুলি। সে বলে, ‘অতিরিক্ত যানজট রয়েছে এ শহরে। তবে পরিবারের সঙ্গে সৈকতে বেশ ভালো সময় কাটাচ্ছি। সব কিছু ঠিক থাকলে এ তিন দিন খুব ভালো যাবে বলে আশা করছি।’

তবে সমুদ্র ছাড়া কক্সবাজারে পর্যাপ্ত বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন কিছু পর্যটক। তারা জানান, সূর্য অস্ত যাওয়ার পর এখানে আর কিছু করার থাকে না পর্যটকদের।

করোনার কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ভয়াবহ সংকটে পড়েছিলেন পর্যটন নগরীর ব্যবসায়ীরা। পর্যটকদের এমন ভিড়ে তারা অবশ্য খুশি।

কলাতলীর দ্য গ্র্যান্ড স্যান্ডি হোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুর রহমান বলেন, ‘বিজয় দিবসের ছুটিতে অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে আমাদের হোটেলের সব রুম। সেই সঙ্গে এখন পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। তাই সবাই ব্যস্ত সময় পার করছেন।’

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম সিকদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘করোনায় লকডাউনের পর হোটেল ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মুখে কিছুটা হাসি ফুটেছে। পর্যটকরা যেন নিরাপদে হোটেল-মোটেলগুলোয় অবস্থান করতে পারেন, সে জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।

‘এ ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মানা ও পর্যটক হয়রানি রোধে সমিতির পক্ষ থেকে সবাইকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া আছে। কেউ অবহেলা করলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

ভিড় সামলাতে সৈকতে অতিরিক্ত দুই শতাধিক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত সুপার মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিজয় দিবস উপলক্ষে দেশি-বিদেশি লাখো পর্যটক ভিড় করবেন। এতে কোনো পর্যটক যাতে অপ্রীতিকর ঘটনার শিকার না হন, সে দিকে খেয়াল রেখে ট্যুরিস্ট পুলিশের বাড়তি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।’

তিনি জানান, বাস থেকে নেমে হোটেল-মোটেল জোনে প্রবেশ থেকে পর্যটকদের ওপর নজর রাখবেন ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা। সাদা পোশাকের পাশাপাশি থাকবে গোয়েন্দা নজরদারি। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা মুহুর্তেই নিয়ন্ত্রণে নিতে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

প্রতিটি হোটেল-মোটেলে স্বাস্থ্যবিধি মানার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে জানিয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিজয় দিবসে অতিরিক্ত পর্যটক আগমন ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সৈকতের ছয়টি পয়েন্টে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নিয়মিত টহল জোরদার করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর