নৌকার ভোট ওপেন দিতে হবে। যেহেতু নৌকা স্বাধীনতার প্রতীক। ৭০ সালে নৌকার ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দিয়েছেন। এখন আর সে অবস্থান নেই। তাই নৌকার ভোট ওপেন দিতে হবে।
কথাগুলো লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহিমের। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ইউনিয়নের মোহাম্মদনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে কর্মী সমাবেশে এভাবেই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী মিজানুরের সেই কথার ভিডিও এরই মধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। নিউজবাংলার হাতেও এসেছে তেমন একটি ভিডিও।
সেখানে মিজানুরকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘মেম্বারের ভোট গোপনে দিবেন। কারণ মেম্বাররা অনেকেই আমার পরিষদে ছিল। যদি নৌকার ভোট ওপেন না দেন, তাহলে কেন্দ্রে যাওয়ার দরকার নাই।
‘সবাইকে আবারও বলছি, নৌকার ভোট ওপেন দিবেন। এ ছাড়া অন্য কিছু বলতে চাই না। শুধু একটি কথা, নৌকার ভোট। বুঝতে কি কোনো সমস্যা হচ্ছে আপনাদের? যদি সমস্যা না হয়, তাহলে সুন্দরভাবে ২৬ ডিসেম্বর কেন্দ্রে গিয়ে নৌকার ভোটে ওপেনে সিল মেরে আসবেন। অন্য চিন্তা বাদ দেন, বলে দিলাম।’
নৌকার এ প্রার্থীর বিরুদ্ধে এ ধরনের হুমকি দেয়ার অভিযোগ অবশ্য নতুন নয়। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার পর থেকেই ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে কর্মী সমাবেশে একই ধরনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন।
ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সৌরভ হোসেন রুবেল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল ইসলাম সুমনও একই অভিযোগ করেছেন।
তাদের অভিযোগ, মিজানুর গত কয়েক দিন ধরে ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ চলার সময় নৌকার ভোট ওপেন দিতে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। এ ছাড়া তার কর্মী-সমর্থকদের হুমকি-ধমকিতে ভয়ে আছেন সাধারণ ভোটাররা।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মিজানুর দাবি করেন, পরাজয় জেনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সৌরভ হোসেন ও জামায়াতের চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল ইসলাম সুমন নির্বাচনি পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। বর্তমানে নির্বাচনি পরিবেশ ভালো রয়েছে।
সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা স্বপন কুমার ভৌমিক জানান, এরই মধ্যে একাধিক ইউনিয়নে হুমকি-ধমকির অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন। এ ছাড়া কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণে সব প্রস্তুতি নিয়েছে। কোনো ধরনের বিশৃংখলা করলে প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।