বাংলাদেশের জন্মের ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও শোষণ থেকে মানুষের মুক্তি মেলেনি বলে মনে করেন জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘পশ্চিম পাকিস্তানিরা আমাদের শোষণ করত। এখন আমরা শোষিত হচ্ছি দেশের মানুষের কাছে। প্রতিবছর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হচ্ছে, বেগমপাড়া তৈরি হচ্ছে শোষণের টাকায়।
গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সিরাজুল হকের জাতীয় পার্টিতে যোগদান অনুষ্ঠানে বুধবার এ কথা বলেন। সিরাজুল হককে দলে স্বাগত জানিয়ে তাকে দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা পদে নিয়োগ দেন জাপা নেতা।
বাংলাদেশ তার সংবিধানের মূল নীতি থেকে সরে এসেছে বলেও মনে করেন প্রয়াত সেনাশাসক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ভাই। তিনি বলেন, ‘শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে সংবিধানে চারটি মূল নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, সংবিধানের চারটি মূল নীতি থেকেও আমরা দূরে সরে গেছি।
‘সাংবিধানিকভাবেই দেশে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাই গণতন্ত্র আর নেই। আবার সমাজতন্ত্র বাদ দিয়ে মুক্তবাজার অর্থনীতি গ্রহণ করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি এবং দলীয়করণ করেছে। এতে সামাজিক ন্যায়বিচার আর নেই।’
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার রাষ্ট্রক্ষমতায় গিয়ে স্বাধীনতার মূল চেতনা থেকে দেশকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে বলেও মনে করেন জি এম কাদের। বলেন, ‘দুর্নীতি, দলীয়করণ আর স্বজনপ্রীতির কারণে দেশের মানুষ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ওপর বীতশ্রদ্ধ। তাই দেশের মানুষ আগামী দিনে জাতীয় পার্টিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় দেখতে চায়। দেশের মানুষ বিশ্বাস করে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের চেয়ে জাতীয় পার্টি বেশি সুশাসন দিতে পারবে।’
অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুর্নীতি ও দুঃশাসনে দেশের মানুষ বিরক্ত। দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা যেভাবে শক্তি প্রদর্শন করেছে, তাতে দেশের মানুষ আর সরকারের ওপর আস্থা রাখতে পারে না।‘
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সুনীল শুভ রায়, মীর আব্দুস সবুর আসুদ।