ঝিনাইদহের মহেশপুরে আমবাগান থেকে একটি রাসেলস ভাইপার উদ্ধার করা হয়েছে।
উপজেলার শ্যামকুড় ইউনিয়নের ভবনগর গ্রামের ওই আমবাগান থেকে মঙ্গলবার বিকেলে বিষধর সাপটি উদ্ধার করেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক।
ভবনগর গ্রামের ‘প্রকৃতি প্রেমিক’ সংগঠনের সভাপতি নাজমুল হোসেন বলেন, ‘সাপটি বস্তাবন্দি করে রাখা হয়েছে জেনে বুধবার সকালে সেখানে যাই। শনাক্তের পর বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ অধিদপ্তরে খবর দেয়া হয়। তারা এসে সাপটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ, বেনাপোল ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিটের জুনিয়র ওয়াইল্ডলাইফ স্কাউট জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সাপটি আসলে রাসেলস ভাইপার বলে আমরা শনাক্ত করেছি। সাপটি উদ্ধার করে আমাদের কার্যালয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সুবিধাজনক স্থানে সাপটি অবমুক্ত করা হবে।’
রাসেলস ভাইপার সম্পর্কে বাংলাদেশ বনবিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা বলেন, ‘‘রাসেলস ভাইপার সাপটি ‘চন্দ্রবোড়া’ বা ‘উলুবোড়া’ নামেও পরিচিত। এটি ইঁদুর, ব্যাঙ ও টিকিটিকি খেয়ে থাকে। বসতবাড়ির আশপাশে এসব বেশি থাকায় খাবারের খোঁজে রাসেলস ভাইপার অনেক সময় লোকালয়ে চলে আসে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণত পদ্মার চরাঞ্চল, নদী অববাহিকা ও বরেন্দ্র এলাকায় এই সাপের দেখা বেশি মেলে। এরা ডিম দেয়ার বদলে সরাসরি ৬-৬৩টি বাচ্চা প্রসব করে। দেখতে মোটা, লম্বায় ২ থেকে ৩ ফুট দৈর্ঘ্যের এই সাপের গায়ে ছোপ ছোপ গোলাকার কালো দাগ থাকে। এটি সম্পর্কে যার ধারণা নেই তিনি অজগর ভেবেই ভুল করবেন।’
আইইউসিএনের ২০১৫ সালের লাল তালিকা অনুযায়ী রাসেলস ভাইপার বাংলাদেশে সংকটাপন্ন প্রাণীর তালিকায় আছে।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ভেনম রিসোর্স সেন্টারের প্রশিক্ষক ও গবেষক বোরহান বিশ্বাস জানান, ভারত থেকে ২০১০-১১ সালের দিকে পদ্মার অববাহিকা ধরে রাসেল ভাইপার বাংলাদেশে এসেছে। প্রথম রাজশাহীতে রাসেলস ভাইপারের দেখা মেলে। এরপর পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর, মুন্সিগঞ্জ ও শরীয়তপুর, চাঁদপুরে দেখা মিলেছে।