ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃত্যকলা বিভাগের ছাত্রী এলমা চৌধুরী মেঘলার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বনানী থানায় করা হত্যা মামলায় তার স্বামী ইফতেখার আবেদীনকে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
বনানী থানা পুলিশ বুধবার আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করে। ঢাকার মহানগর হাকিম আশেক ইমাম তিন দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দেন।
এলমার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা করেন তার বাবা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী।
রাজধানীর বনানী থানায় মঙ্গলবার রাতে করা এ মামলায় আসামি করা হয় এলমার স্বামী ইফতেখার আবেদীন এবং তার শ্বশুর-শাশুড়িকে।
মামলার পর মঙ্গলবার আটক হওয়া ইফতেখারকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তার মা-বাবাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
এলমা ঢাবির নৃত্যকলা বিভাগের ২০১৫-১৬ সেশনের ছাত্রী। তিনি সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ঢাকার ধামরাই পৌর এলাকায়।
নির্যাতনে হত্যার অভিযোগ
এলমার সহপাঠী নুসরাত জাহান তিথি বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই ক্লাসে অনিয়মিত হয়ে পড়ে এলমা। শ্বশুরবাড়ির লোকজন তার ওপর নজরদারি চালাত বলে মনে হয়েছে। কয়েক দিন আগে তার স্বামী কানাডা থেকে ফেরার পরই এই ঘটনা ঘটল।’
আরেক সহপাঠী আব্দুল্লাহ বলেন, ‘মেঘলার বিয়ে হয়েছে ছয় মাস আগে। কী করে কী হয়েছে জানি না। ইউনাইটেড হাসপাতালে গিয়ে ওর সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখেছি।’
সহপাঠী আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘বিয়ের পর সে শুধু পরীক্ষা দিতে ক্যাম্পাসে আসত। সে সময় তার শ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে একজন লোক সঙ্গে থাকত। এলমার হাজব্যান্ড ভিডিও কলে এসব দেখত।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিয়ের পর এলমা সম্পূর্ণ চেঞ্জ হয়ে যায়। বোরকা-হিজাব পরা শুরু করে। আমাদের কারও সঙ্গে কথা বলত না। নীরবে এসে নীরবেই চলে যেত। আমরা এখন বুঝতে পারছি, বিয়ের পর তাকে ব্যাপক মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের মধ্যে রাখা হতো।
‘এলমার বাড়ি সাভারে, আর সে থাকত বনানীতে। সেখানে তার শ্বশুর-শাশুড়ি থাকত। তার স্বামী থাকত কানাডায়। সম্প্রতি দেশে আসে। তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হতো, কিন্তু সে মুখ বুজে সবকিছু সহ্য করত।’
এলমার মামা ইকবাল বলেন, ‘ওর শাশুড়ির কল পেয়ে হাসপাতালে এসে দেখি ও মারা গেছে।’