বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তিন দিন পর সূচক বাড়লেও লেনদেন আবার তলানিতে

  •    
  • ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৫:১৪

স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর মূলধন বাড়ানোর ইস্যুতে আবার বেড়েছে এই ধরনের কোম্পানির দর। আগের দিন দরপতন হয়েছে, এমন কিছু কোম্পানি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে সূচক বাড়ানোর প্রধান ভূমিকায় এসব কোম্পানি কখনও প্রভাব রাখে না। ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর পাশাপাশি টানা দর সংশোধনে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডসহ বেশ কিছু কোম্পানির ইতিবাচক প্রবণতায় সূচকের পতন থেমেছে এবার।

সপ্তাহের প্রথম তিন কর্মদিবসে ১৪৬ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট সূচক পতনের পর সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ৩০ পয়েন্ট সূচক বাড়লেও বিনিয়োগকারীদের মনে স্বস্তি ফেরেনি।

সোমবার আট মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হওয়ার পরদিন আবার তা হাজার কোটি টাকার বেশি উঠলেও বুধবার তা আবার নেমেছে তলানিতে। কোনো রকমে ৮০০ কোটির ঘর অতিক্রম হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এমনিতে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস হলেও সেদিন বিজয় দিবসের সাধারণ ছুটি থাকায় লেনদেন বন্ধ থাকবে।

লেনদেনের শুরুতে সূচক বেড়ে কিছুক্ষণ পর তা আবার কমে গেলে টানা চতুর্থ দিন সূচক পড়ার শঙ্কা জাগে। তবে বেলা ১টার পর থেকে শেয়ারগুলো কিছুটা দর ফিরে পেতে থাকলে শেষ পর্যন্ত ইতিবাচক প্রবণতায় শেষ হয় লেনদেন।

শেষ পর্যন্ত দর হারানো ও দর বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানির সংখ্যা দেখা গেছে সমানসংখ্যক। বেড়েছে ১৫৯টির দর, কমেছে ১৫৮টির। ৬০টি কোম্পানি দর ধরে রাখতে পেরেছে।

টানা তিন দিন পতনের পর সূচকের এই ঘূরে দাঁড়ানোতেও স্বস্তিতে নেই বিনিয়োগকারীরা

তবে লেনদেন কমে গেছে ২০ শতাংশ। আগের দিন হাতবদল হয়েছিল ১ হাজার ৮০ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সেখান থেকে কমে হয়েছে ৮০৭ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর মূলধন বাড়ানোর ইস্যুতে আবার বেড়েছে এই ধরনের কোম্পানির দর। আগের দিন দরপতন হয়েছে, এমন কিছু কোম্পানি ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তবে সূচক বাড়ানোর প্রধান ভূমিকায় এসব কোম্পানি কখনও প্রভাব রাখে না। ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর পাশাপাশি টানা দর সংশোধনে থাকা বেক্সিমকো লিমিটেডসহ বেশ কিছু কোম্পানির ইতিবাচক প্রবণতায় সূচকের পতন থেমেছে এবার।

ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকোর দর বৃদ্ধির কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ৭ দশমিক ৮ পয়েন্ট। বেক্সিমকোর কারণে সূচকে যোগ হয়েছে ৬ দশমিক ৮ পয়েন্ট।

এ ছাড়া বেক্সিমকো ফার্মা, ইউনিলিভার, স্কয়ার ফার্মা, রেকিট বেনকিজার, গ্রামীণফোন, ডেল্টা লাইফ, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ও বিএসআরএম লিমিটেডও সূচকে যোগ করেছে বেশ কিছু পয়েন্ট।

সব মিলিয়ে সূচক যত বেড়েছে, এই ১০টি কোম্পানি যোগ করেছে তার চেয়ে বেশি

সব মিলিয়ে ১০টি কোম্পানিই সূচক বাড়িয়েছে ৩৩ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট। অর্থাৎ পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়ানোর পেছনে এই কোম্পানির ভূমিকাই ছিল প্রধান।

এর বিপরীতে রবি, ওয়ালটন, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউনাইটেড পাওয়ার, পাওয়ারগ্রিড, তিতাস গ্যাস, কাট্টালী টেক্সটাইল, ডেসকো, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, আইসিবির মতো কোম্পানিগুলো সূচক কিছুটা টেনে ধরেছে।

এই ১০টি কোম্পানি মিলিয়ে সূচক কমিয়েছে ১৩ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট।

এই ১০টি কোম্পানি সূচক সবচেয়ে বেশি টেনে ধরেছে নিচের দিকে

বিবিধ, ওষুধ ও রসায়ন এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতে তুলনামূলক ভালো দিন গেছে। প্রধান অন্য খাতগুলোর মধ্যে বেশির ভাগেই দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা।

বেশ কিছুদিন পর বেক্সিমকো লিমেটেডে আগ্রহ বাড়ার পর লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে বিবিধ খাত। দুই সপ্তাহের মধ্যে এক দিন ছাড়া প্রতিদিন শীর্ষে থাকা ব্যাংক খাত নেমে এসেছে তৃতীয় অবস্থানে। দ্বিতীয় অবস্থান ধরে রেখেছে ওষুধ ও রসায়ন খাত।

আগের দিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি আদেশ এসেছে, যার দুটি ব্যাখ্যা করা যায়। ব্যাংকগুলোয় করোনার সময় বিশেষ সুবিধাগ্রাপ্ত ঋণগুলোর জন্য অতিরিক্ত ২ শতাংশ সঞ্চিতি সংরক্ষণের আদেশ দেয়া হয়েছে। এর ফলে তাদের চূড়ান্ত আয় কমে যেতে পারে। আবার এমনও একটি সুযোগ দেয়া হয়েছে, যাকে ইতিবাচক হিসেবেও দেখা যায়। কিস্তির ২৫ শতাংশ জমা দিলেও সুদকে ব্যালান্স শিটে দেখানো যাবে। ফলে এটা ইতিবাচকও হতে পারে।

এই নির্দেশের পর বিনিয়োগকারীরা যে কিছুটা বিভ্রান্ত, সেটি দেখা গেছে লেনদেনে। দর বৃদ্ধি ও কমার হারও খুব একটা বেশি ছিল না। তবে নতুন করে এই খাতে বিনিয়োগে যেতে চাননি বিনিয়োগকারীরা। ফলে কমেছে লেনদেন।

দর বৃদ্ধিতে দশ কোম্পানি

মঙ্গলবার দর পতনের পর বুধবার দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এসেছে পাট খাতের জুট স্পিনার্স। লোকসানি ও স্বল্পমূলধনি এই কোম্পানিটির শেয়ার দর এদিন বেড়েছে দিনের সর্বোচ্চ ৯.৯৪ শতাংশ। শেয়ার দর ১১৬ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১২৮ টাকা ৩০ পয়সা। কোম্পানিটির ১৬ লাখ ৬২ হাজার টাকার ১৩ হাজার ১৪টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।

আরেক লোকসানি কোম্পানি বিবিধি খাতের খান ব্রাদাস পিপি ওভেন ছিল দর বৃদ্ধির দ্বিতীয় তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে। কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৯.৫৬ শতাংশ। লেনদেন হয়েছে ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকার ২১ লাখ ৪৪ হাজার ৫১১টি শেয়ার।

স্বল্প মূলধনি এএমসিএল (প্রাণ) এর দর বেড়েছে ৮.৬৮ শতাংশ।

বেশ কিছুদিন পর লেনদেন শীর্ষে উঠেছে বিবিধ খাত, ব্যাংক নেমে গেছে তৃতীয় অবস্থানে

এছাড়া সাত থেকে আট শতাংশ পর্যন্ত শেয়ার দর বেড়েছে দুটি কোম্পানির। এর মধ্যে মেট্টো স্পিনিংয়ের দর বেড়েছে ৭.২৬ শতাংশ আর লিব্রা ইনফিউশনের দর বেড়েছে ৭.১৪ শতাংশ। এছাড়া স্বল্প মূলধনি লোকসানি রেনউইক যগেশ্বরের শেয়ার দর বেড়েছে ৬.২৪ শতাংশ। রহিমা ফুডের দর বেড়েছে ৬.০৪ শতাংশ।

৫ শতাংশের বেশি বেড়েছে আরও দুটি কোম্পানির দর। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের জিবিবি পাওয়ারের দর বেড়েছে ৫.৬৩ শতাংশ আর স্বল্প মূলধনি ন্যাশনাল টি কোম্পানির দর বেড়েছে ৫.২১ শতাংশ।

এছাড়া চার শতাংশের বেশি শেয়ার বেড়েছে সাতটি কোম্পানির দর। একই সংখ্যক কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে তিন শতাংশের বেশি। আর ১৩টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে দুই শতাংশের বেশি।

দর পতনের ১০ কোম্পানি

এই তালিকার শীর্ষে ছিল কাট্টালি টেক্সটাইল, যেটি দর হারিয়েছে ৬.৮১ শতাংশ। লেনদেন হয়েছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার। হাতবদল হয়েছে ৫ লাখ ৯০ হাজার ৮৯৭টি শেয়ার।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকে উসমানিয়া গ্লাস কোম্পানি দর হারিয়েছে ৪.৮৮ শতাংশ। কোম্পানিটির শেয়ার দর মঙ্গলবার বেড়েছিল। এছাড়া গত দশ কর্মদিবসের পরিসংখ্যানে কোম্পানির শেয়ার দর মাত্র দুইদিন কমেছে। বাকি আটদিন দর বেড়েছে।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দর কমেছে ৪.৪৩ শতাংশ। ইনফরমেশন সার্ভিস নেটওয়ার্কের শেয়ার দর কমেছে ৩.৭৮ শতাংশ। কোম্পানিটির ১ কোটি ৮ লাখ শেয়ার লেনদেন হয়েছে, হাতবদল হয়েছে ২ লাখ ৫০ হাজার ৭৪৬টি শেয়ার।

বিবিধ ছাড়া প্রধান প্রায় সব খাতেই লেনদেন কমে গেছে

স্বল্প মূলধনি উৎপাদন বন্ধ আজিজ পাইপের দর কমেছে ৩.৭০ শতাংশ। প্রথম প্রান্তিকে লোকসান দেয়ার পর অন্তর্বর্তী লভ্যাংশ ঘোষণায় লাফ দেয়া আরামিট সিমেন্টের দর কমেছে ৩.৬০ শতাংশ আর সোনারগাঁও টেক্সটাইলের শেয়ার দর কমেছে ৩.১৯ শতাংশ।

মঙ্গলবার দর বৃদ্ধি পাওয়া ফু ওয়াং সিরামিকের শেয়ার দর কমেছে ৩.৩১ শতাংশ। এছাড়া তুং হাই নিটিংয়ের দর ৩.১৭ শাতংশ, রিজেন্ট টেক্সটাইলের দর ২.৯৪ শতাংশ ও স্বল্প মূলধনি রহিম টেক্সটাইলের শেয়ার দর কমেছে ২.৯২ শতাংশ।

লেনদেনের শীর্ষে ১০ কোম্পানি

লেনদেনে এগিয়ে থাকা দশ কোম্পানির মধ্যে বুধবার তিনটি কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। বাকি সাতটি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে।

লেনদেনে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ছিল বিবিধ খাতের বেক্সিমকো লিমিটেড, যার ১২৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকার ৮২ লাখ ৯৭ হাজার ৫০৪টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। বেশ কিছুদিন পর কোম্পানিটি দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছে।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ফরচুন সুজের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকার। হাতবদল হয়েছে ৪২ লাখ ৬৬ হাজার ৮৮৩টি শেয়ার।

তৃতীয় অবস্থানে থাকা ওয়ান ব্যাংকের দর টানা ছয় দিনের মতো কমেছে। ব্যাংকটির মোট ২ কোটি ৫২ লাখ ৩ হাজার ৪২১টি শেয়ার হাতবদলের মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৩৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

চতুর্থ স্থানে থাকা তথ্য প্রযুক্তি খাতের জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার দর বেড়েছে ১.৩৭ শতাংশ। মোট লেনদেন হয়েছে ২৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ১৫ লাখ ২৫ হাজার ৩০৪টি শেয়ার।

সোনালী পেপারের লেনদেন হয়েছে ২৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। হাতবদল হয়েছে ৩ লাখ ৩৫ হাজার ১৪৮ টি শেয়ার ।

একটিভ ফাইননের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৮০ লাখ টাকার, হাতবদল হয়েছে ৯০ লাখ ১২ হাজার ৬৪৬টি শেয়ার।

জিএসপি ফাইন্যান্সের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, হাতবদল হয়েছে ৮১ লাখ ১ হাজার ৯৩০টি।

এ বিভাগের আরো খবর