র্যাবের সাবেক ও বর্তমান কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গুলশানে বুধবার সকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘র্যাবের কতিপয় কর্মকর্তার ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা বিব্রতকর, উদ্বেগজনক, লজ্জাজনক। তবে এ উদ্যোগ অবশ্যম্ভাবী। এ নিষেধাজ্ঞা আওয়ামী লীগের ওপর। তা তারা অস্বীকার করতে পারবে না। এ দায় তাদের নিতে হবে।’
মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে এ নিষেধাজ্ঞায় জাতিসংঘের শান্তি মিশনে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ও প্রতিরক্ষা বাহিনীর ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি মনে করে র্যাবের ওপরে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার সব দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করর লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বেআইনিভাবে ব্যবহার করার সকল দায়িত্ব তাদেরই।’
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে র্যাবের বর্তমান ও সাবেক সাত কমর্কতার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র বিভাগ ও রাজস্ব বিভাগ আলাদা আলাদা করে এ নিষেধাজ্ঞা দেয়।
নিষেধাজ্ঞা পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন র্যাবের সাবেক মহাপরিচালক ও পুলিশের বর্তমান মহাপরিদর্শক তথা আইজিপি বেনজীর আহমেদ, র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশনস) তোফায়েল মুস্তফা সরওয়ার, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ও আনোয়ার লতিফ খান এবং বাহিনীটির সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ।
র্যাবের বর্তমান ও সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি দেখভালের জন্য সরকারের তিনজন মন্ত্রীকে দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রূঢ় শোনালেও এটা অস্বীকার করার সুযোগ নাই, গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক এই নিষেধাজ্ঞা চলমান গণ ও মানবতাবিরোধী সরকারের জন্য সমগ্র বিশ্ববাসীর পক্ষ থেকে একটি শক্তিশালী বার্তা।
‘একটা অগণতান্ত্রিক কর্তৃত্ববাদী সরকারের শাসনকালেই এ ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়। আর বাংলাদেশে বিশ্ববাসীর কাছে বর্তমানে সে রকমই একটি কর্তৃত্ববাদ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং দুর্নীতি আশ্রয়ী সরকারব্যবস্থা চালু রয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, ইকবাল মাহমুদ টুকু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান, বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান।