জরাজীর্ণ ভবনের ছাদ ও দেয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা, কলামে দেখা গেছে ফাটল আবার কোথাও কোথাও বেরিয়ে এসেছে দেয়ালের ভেতরের রড।
কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স ভবনের চিত্র এটি। ঝুঁকিপূর্ণ এ ভবনেই চলছে উদ্ধারকর্মীদের নিত্যদিনের কাজ। কয়েক বছর ধরেই চরম ঝুঁকিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে সেখানে বাস করছেন ফায়ার সার্ভিসের শতাধিক কর্মী।
জানা যায়, কক্সবাজারের বাজারঘাটায় অবস্থিত ফায়ার সার্ভিসের অফিস ভবন। ১৯৬৪ সালে নির্মিত হয় ভবনটি। নির্মাণের ৫৭ বছর পার হলেও ভবনটির সংস্কার হয়নি একবারও। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বছরখানেক আগেও ছাদ ধসে এক কর্মকর্তার সন্তান আহত হয়।
এ ছাড়া সংস্কার না করায় বিভিন্ন সময়ের ভূমিকম্পে ভবনটির গায়েও দেখা গেছে ভয়াবহ ফাটল। এরপরও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের। তাই বাধ্য হয়েই সেখানে সব ধরনের কর্মকাণ্ড ও বসবাস করতে হচ্ছে উদ্ধারকর্মী ও কর্তাদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের ভবনের ভেতরে ঢুকেই চোখে পড়বে ছাদের ধসে যাওয়া বিভিন্ন অংশ। ভেঙে পড়েছে ভবনের সামনের অংশ। মূল পিলারে ফাটল ধরলেও বাহির থেকে রং দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে সেগুলো।
এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফায়ার সার্ভিসের একাধিক সদস্য নিউজবাংলাকে জানান, তিন বছর আগে কক্সবাজার ফায়ার স্টেশনকে প্রথম শ্রেণির স্টেশন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। সে অনুযায়ী কার্যক্রম চালু হলেও কাঠামোগত কোনো উন্নয়ন হয়নি। স্টেশনে বাড়েনি কোনো সুযোগ-সুবিধাও। তাই বাধ্য হয়েই তাদের এখানে ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে।
তারা আরও জানান, গত ২৬ নভেম্বর ভোরে ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্পে ভবনটি গাছের মতো ঢুলছিল। অনেকে দৌড়ে ভবন থেকে নামতে গেলেও চাপা পড়ার ভয়ে আর সাহস পাননি। এমন পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করা কঠিন বলে মনে করেন তারা।
ভবনের ছাদ ও দেয়াল থেকে খুলে পড়ছে পলেস্তারা।
এ বিষয়ে কথা হয় কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ভবনটি পুরোনো হওয়ায় এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ধসে পড়ছে ভবনের বিভিন্ন অংশ। ভবন সংস্কারের জন্য জেলা প্রশাসক ও গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেও কোনো লাভ হয়নি।’কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণার জন্য প্রায় ৬ থেকে ৭ মাস আগে আবেদন করেছি। কিন্তু এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। আমরা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি, যেন এটি ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়।’এ বিষয়ে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, ‘ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণার বিষয়ে কাজ করতে জেলা প্রশাসনের একটি কমিটি রয়েছে। কমিটির গত বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শিগগির ভবনটি নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত আসবে।’