ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফের কাজের পরিধি বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের মাঝে কেন্দ্রের কাছে হলফনামা চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। একাধিক প্রশ্নোত্তরের পর কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে আগামী দুমাসের মধ্যে বিএসএফের কাজের সীমানা বৃদ্ধি নিয়ে তাদের বক্তব্য জানিয়ে হলফনামা জমার নির্দেশ দিয়েছে।
মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও রাজর্ষী ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ একটি জনস্বার্থ মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে কেন্দ্রের বক্তব্য জানতে চেয়েছে।
মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় এদিন আদালতে সওয়াল-জবাবে বলেন, ‘বিএসএফের আইন অনুযায়ী যেকোনো সময় কর্মক্ষেত্রের পরিধি বাড়ানো যেতে পারে। এখন ১৫ থেকে ৫০ কিলোমিটার হচ্ছে। তারপর হয়তো আরও বৃদ্ধি পাবে। তাই এখনই এটাকে আটকানো প্রয়োজন।’
অপরপক্ষে কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ওয়াই জে দস্তুর বলেন, ‘বিপরীত চিত্রও আছে। কিন্তু সেটা বলা হচ্ছে না। রাজস্থান ও গুজরাট সীমান্তে ৮০ কিলোমিটার থেকে ক্ষমতার পরিধি কমিয়ে দেয়া হয়েছে। বিএসএফকে বাড়তি ক্ষমতা কেন দেয়া হল তা আমরা বিস্তারিত আদালতকে জানাব।’
এরপর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে ইতোমধ্যে পাঞ্জাব সরকার সুপ্রিমকোর্টে গেছে। তারা কী আবেদন করেছে আমাদের জানা নেই। পুরো বিষয়টি না দেখে এখনই অবস্থান জানানো সম্ভব নয়।’
সম্প্রতি বিএসএফের কাজের পরিধি আন্তর্জাতিক সীমানা থেকে ভারতীয় ভূখণ্ডের ভেতরে ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করে নির্দেশিকা জারি করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। এ নিয়ে শুরু হয়েছে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত ভেতরে ঢুকে বিএসএফ শর্তসাপেক্ষে যেকোনো ধরনের তল্লাশি, জিজ্ঞাসাবাদ, বাজেয়াপ্ত এমনকি গ্রেপ্তার করতে পারবে।
এই নির্দেশ ঘিরে বিতর্ক ছড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে চিঠি লিখে এটা প্রত্যাহারের আর্জি জানিয়েছেন। পরে এ বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা হয়। ওই মামলার সওয়াল-জবাব শেষে মঙ্গলবার কেন্দ্রকে হলফনামা দিয়ে তাদের বক্তব্য জানাতে বলা হয়।
আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি হবে বলে জানা গেছে।