চেয়ারম্যান প্রার্থীর জয় নিশ্চিতে কেন্দ্র দখল করতে গিয়েই হত্যা করা হয়েছে বিজিবি সদস্য নায়েক রুবেল হোসেনকে। এ হামলায় নেতৃত্ব দেন প্রার্থী মারুফ হোসেন ওরফে অন্তিক নিজেই।
সাভারের আশুলিয়া থেকে গ্রেপ্তারের পর মারুফ হোসেন অন্তিকের বরাত দিয়ে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন ঘটনার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘মারুফ হোসেন কিশোরগঞ্জ উপজেলায় গড়াগ্রাম ইউনিয়নের নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। তার বাবা মোসাদ্দেক হোসেন ১৯ বছর ধরে সেখানে ইউপি চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১৭ সালে বাবা মারা গেলে উপনির্বাচনে মারুফ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এবারের নির্বাচনেও তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন।
‘মারুফ হিসাব করে দেখেন নির্বাচনে জয়ী হতে হলে তার নিজ কেন্দ্রের সব ভোট পেতে হবে। এ জন্য পশ্চিম দলিরাম মাঝাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র দখলের পরিকল্পনা নেন তিনি। আগের নানা চেষ্টার পাশাপাশি তিনি ভোট চলাকালীন বেলা ৩টার দিকে ২০/৩০ জন সমর্থক নিয়ে জাল ভোট দেয়ার চেষ্টা চালান। কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশ ও নির্বাচনি কর্মকর্তারা তাদের বাধা দেন।’
র্যাবের মুখপাত্র আরও বলেন, ‘মারুফের সমর্থকরা নির্বাচনসংশ্লিষ্টদের গালিগালাজসহ লাঞ্ছিত করেন। প্রিজাইডিং অফিসারের মাধ্যমে বিষয়টি জেনে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ভোট বন্ধ করার নির্দেশ দেন। বিকেল সাড়ে ৪টায় ভোট গণনা শুরু হলে অন্য ৮টি কেন্দ্রের ফলাফলে মারুফ সামান্য ভোটে পিছিয়ে আছেন বলে জানতে পারেন। তখন নিজ এলাকার কেন্দ্র দখলে নিয়ে জাল ভোট দিতে তিনি চেষ্টা চালান। এ সময় শতাধিক সমর্থকসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কেন্দ্রে হামলা করেন মারুফ।
‘বিজিবির একটি দল টহল দিতে গেলে রাত সাড়ে ৮টায় মারুফ হোসেনের সমর্থকরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর চড়াও হন। এ সময় হামলা ও সংঘর্ষে জখম বিজিবির নায়েক রুবেল অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান।’
গত ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচনের দিন নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় গড়াগ্রাম ইউনিয়নে বিজিবি সদস্য নায়েক রুবেল হোসেন নিহত হন।
এ ঘটনায় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ললিত চন্দ্র রায় ৩০ নভেম্বর মারুফ হোসেনকে প্রধান আসামি করে ৯৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার পর থেকে আসামি মারুফ আত্মগোপনে ছিলেন। সোমবার সাভারের আশুলিয়া থেকে র্যাব-৪ মারুফকে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মারুফ ঘটনায় নিজের জড়িত থাকার তথ্য স্বীকার করেছেন।