হবিগঞ্জের বাহুবলে যৌতুকের জন্য হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। রায়ে আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস দেয়া হয়েছে শাশুড়ি ও তার এক দেবরকে।
হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক সুদীপ্ত দাশ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে এই রায় দেন।
হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবুল হাসিম মোল্লা মাসুম নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দণ্ড পাওয়া ২৪ বছর বয়সী আসামি হেলাল মিয়ার বাড়ি বাহুবল উপজেলার লাকড়িপাড়া গ্রামে।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে বাদী পক্ষ। তবে রায় চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছে আসামিপক্ষ।
এজাহারের বরাতে তিনি জানান, ২০১৭ সালে উপজেলার লাকড়িপাড়া গ্রামের সৈয়দ হেলাল মিয়ার সঙ্গে বরগাঁও গ্রামের আব্দুল হামিদ চৌধুরীর মেয়ে লাভলি আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে লাভলিকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতেন স্বামী।
ওই বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর রাতেও হেলাল মিয়া লাভলিকে মারধর করেন। পরে হেলালের পরিবার লাভলির পরিবারকে ফোন দিয়ে জানায় লাভলি অসুস্থ।
লাভলির ভাই শাহীন চৌধুরী তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে নেয়ার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় ২৮ সেপ্টেম্বর শাহীন চৌধুরী হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলা করেন।
মামলায় নিহতের স্বামী হেলাল মিয়া, দেবর, শ্বশুর-শাশুড়িসহ ৫ জনকে আসামি করা হয়।
আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বাহুবল থানা পুলিশকে তদন্তের নিদের্শ দেয়।
পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে স্বামী হেলল মিয়া, শাশুড়ি সৈয়দা সাহেদা খাতুন ও তার ধর্মভাই একই গ্রামের তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়।
আদালত ২৩ জনের স্বাক্ষগ্রহণ শেষে মঙ্গলবার হেলাল মিয়াকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছেন মামলার বাদী শাহিন চৌধুরী। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট। তবে দ্রুত যেন মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়, সেই দাবি জানাই।’
আসামি পক্ষের আইনজীবী হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এ রায়ে অসন্তুষ্ট। আমরা মনে করি ন্যায়সঙ্গত রায় হয়নি।
‘এ ব্যাপারে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। আশা করি উচ্চ আদালত আমাদের আসামিকে খালাস দেবেন।’