বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সাত বছরেও বিচার হয়নি তাপস হত্যার

  •    
  • ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১ ১২:৩৪

সাক্ষীর অভাবে তাপস হত্যার মামলার কার্যক্রম থমকে আছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আইনজীবী এ কে এম সিরাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘মামলার দিন ঠিক করা হয়, কিন্তু কেউ সাক্ষ্য দিতে আসে না। তাই কোনো অগ্রগতি হয়নি।’

সাত বছর আগে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে স্মৃতিসৌধে ফুল দেয়াকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের গুলিতে নিহত হন সংস্কৃত বিভাগের ছাত্র তাপস সরকার।

২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর চবির শাহ আমানত হলের সামনে এ হত্যার ঘটনা ঘটে। হত্যার সাত বছর পার হলেও এখনও বিচার পায়নি বলে দাবি তাপসের পরিবার ও বন্ধুদের।

তাপসের ভাই শ্রাবণ সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ ভাইকে হত্যার এত দিন পরও বিচার হয়নি, আসামিরা বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমরা সবাই চাই ভাইয়ের হত্যার বিচার হোক। মা খুব অসুস্থ। ভাই মারা যাওয়ার পর থেকে তিনি বাকরুদ্ধের মতো হয়ে গেছেন। মৃত্যুর আগে তিনিও চান তার ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে।’

পাঁচ বছর আগে তদন্ত কর্মকর্তা ২৯ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়ার মধ্যেই মামলার বিচারকাজ আটকে আছে বলে দাবি মামলার বাদী ও পরিবারের।

আদালত বলছে, সাক্ষীরা সাক্ষ্য না দেয়ায় এগোচ্ছে না বিচারকাজ, তাই অগ্রগতি নেই মামলার।

২০১৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে ফেরার সময় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাটল ট্রেনের বগিভিত্তিক দুই সংগঠন ‘ভি-এক্স’ ও ‘সিএফসি’।

সংঘর্ষে ভি-এক্সের নিয়ন্ত্রণাধীন শাহজালাল হল থেকে ছোড়া গুলি সিএফসি নিয়ন্ত্রণাধীন শাহ আমানত হলের তৃতীয় তলার বারান্দায় দাড়ানো তাপস সরকারের পিঠে লাগে। পরে আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

হত্যার পর সিএফসি গ্রুপের পক্ষ থেকে তাপসকে নিজেদের কর্মী বলে দাবি করা হয়। ঘটনার দুই দিন পর তাপসের বন্ধু এবং একই বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।

বিচারের বিষয়ে হাফিজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পিবিআই তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিলেও মামলার বিচারকাজ এখন আদালতেই আটকে আছে, বিচার হচ্ছে না দীর্ঘদিন ধরে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আবরার হত্যাসহ অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী হত্যার বিচার দুই থেকে তিন বছরের মধ্যেই হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাপস হত্যার বিচার অনেক দিন ধরে আটকে আছে।

‘এটা আমাদের কষ্ট লাগে, খারাপ লাগে যে সাত বছরেও বিচার হলো না। একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে যায় অনেক আশা, ভরসা ও স্বপ্ন নিয়ে। একটা স্বপ্ন যখন গলা টিপে হত্যা করা হয়, বিচারটা তখন সবার কাম্য; আমাদেরও কাম্য, পরিবারেরও কাম্য।’

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেয়া অভিযোগপত্র অনুসারে, তাপস হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত হলেন চবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক উপসম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশা। তার ছোড়া গুলিতেই তাপস নিহত হন বলে অভিযোগপত্রে বলা হয়। বাকি ২৮ আসামির মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যায় সহযোগিতা এবং ২৫ জনের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে জড়ো হয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও আতঙ্ক ছড়ানোর অভিযোগ আনা হয়।

আসামিদের মধ্যে কয়েকজন জামিনে থাকলেও অধিকাংশই পলাতক।

এই মামলা তদন্তের দায়িত্ব পান পিবিআইয়ের তৎকালীন পরিদর্শক এবং বর্তমান হালীশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এ মামলার অভিযোগপত্র দিয়েছি চার বছর আগে। অভিযোগপত্র জমা দেয়ার পর আমাদের কাছে আর কোনো তথ্য থাকে না। মামলার বর্তমান অবস্থা পিপি জানবে।’

সাক্ষীর অভাবে তাপস হত্যা মামলার কার্যক্রম থমকে আছে বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আইনজীবী এ কে এম সিরাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, ‘মামলার দিন ঠিক করা হয়, কিন্তু কেউ সাক্ষ্য দিতে আসে না। তাই কোনো অগ্রগতি হয়নি।’

সিএফসি গ্রুপের নেতা ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেল বলেন, ‘যেভাবে আবরার হত্যার বিচার, বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার হয়েছে, একই ভাবে তাপস হত্যার দ্রুত বিচার চাই আমরা।

‘একটি দরিদ্র পরিবারের নিরীহ ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে গুলি খেয়ে মারা যাবে, তা কোনোভাবেই কাম্য না। এই হত্যার বিচার হলে ভবিষ্যতে কেউ আর এ ধরনের হত্যার শিকার হবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই হত্যার সঙ্গে জড়িতরা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বিচার না হওয়ায় তারা নানা ধরনের অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন। তাদের অনেকে এখনও ক্যাম্পাস ও আশপাশেই আছেন।

এ বিভাগের আরো খবর