কনস্টেবল পদে সাধারণ নারী কোটায় মেধাতালিকায় শীর্ষে থেকেও জেলায় জমি না থাকায় খুলনায় একজনের পুলিশে চাকরি না পাওয়ার অভিযোগের দ্রুত খোঁজ নিতে বলেছে হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আদালত।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ নির্দেশনা দেয়।
এ সময় আদালত বলে, ‘জমি না থাকায় চাকরি হবে না, এটা তো হতে পারে না। পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে, এতে তো তাকে আরও উৎসাহ দেয়া উচিত। প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার মানুষ নদীভাঙনের শিকার হয়। তারা কী চাকরি পাবে না।’
জমি না থাকায় পুলিশে চাকরি হয়নি মীমের- এমন একটি সংবাদ প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘জমি না থাকায় চাকরি হয়নি মীমের, এ ঘটনায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আমি আদালতের নজরে আনি। আদালত বিষয়টি দেখে ডিএজিকে খোঁজ নিতে বলেছেন। আগামীকালের মধ্যে বিষয়টি জানাতে বলেছেন। এ সময় আদালত বেশকিছু মন্তব্য করেন।’
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে সাধারণ নারী কোটায় মেধাতালিকায় শীর্ষে থেকেও জেলায় জমি না থাকায় এবার পুলিশে চাকরি পাচ্ছেন না খুলনার মীম আক্তার।
গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খুলনা পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে তাকে জানিয়ে দেয়া হয়, খুলনায় স্থায়ী ঠিকানা না থাকা এবং দৃষ্টিশক্তি কম হওয়ায় চাকরিটি দেয়া সম্ভব হচ্ছে না তাকে।
মীমের আবেদনপত্র সূত্রে জানা যায়, খুলনা মহানগরীর সোনাডাঙ্গা থানার ৩ নম্বর আবাসিক এলাকার ১ নম্বর রোডের ডা. বাবর আলীর ভাড়াটিয়া বাড়ির বাসিন্দা তিনি।
তার বাবা মো. রবিউল ইসলাম খুলনার বয়রা ক্রস রোডে ভাড়ায় ছোট্ট একটি দোকান নিয়ে লেপ-তোশকের ব্যবসা করেন। বেডিং হাউজ নামের একটি দোকানও রয়েছে তার।
মীম আক্তার বলেন, ‘পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে সাধারণ নারী কোটায় আবেদনের পর ২৫ অক্টোবর খুলনা শিরোমনি পুলিশ লাইনসে শারীরিক যোগ্যতা যাচাই হয়। ২৫, ২৬ ও ২৭ অক্টোবর তিন দিন ধরে চলা শারীরিক যোগ্যতা যাচাইয়ে আমি উত্তীর্ণ হই। এরপর ২৮ অক্টোবর লিখিত পরীক্ষা হয় খুলনা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। এতেও উত্তীর্ণ হই। এরপর মনস্তাত্ত্বিক ও মৌখিক পরীক্ষাতেও উত্তীর্ণ হই। ফলাফলে জানতে পারি আমি মেধাতালিকায় প্রথম হয়েছি।’
মীম আরও বলেন, ‘এরপর খুলনা জেলা পুলিশ লাইনসে সাধারণ মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়। সেখানেও উত্তীর্ণ হয়েছি। তারপর ১২ নভেম্বর রাতে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয় রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে। সেখানে ১৩ নভেম্বর সকালে মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়। তারপর বাড়িতে ফিরে আসি। সেখান থেকে বলা হয়েছিল, পরবর্তী সময়ে ফলাফল জানানো হবে। এরপর পুলিশ ভেরিফিকেশন শুরু হয়।
‘সোনাডাঙ্গা থানা, পুলিশ ফাঁড়ি ও সিটি এসবি থেকে বাড়িতে তদন্তে আসে। তাদের কাছে ভূমিহীন সার্টিফিকেট জমা দিয়েছি। তারা বলেছিলেন, ৫ ডিসেম্বর আমাকে জানাবেন। ফোন দিয়ে ৭ ডিসেম্বর জেলা পুলিশ লাইনসে ফিঙ্গার প্রিন্টের জন্য ডাকা হয়। সেখানে পাঁচ আঙুলের ছাপ দিয়ে এসেছিলাম। সেখান থেকে বলেছিল, পরে জানিয়ে দেয়া হবে। এর পর থেকে আর কিছুই জানায়নি।’