বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সরকারকে ১৪ দলের সতর্কতা

  •    
  • ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ১৮:১৬

যুক্তরাষ্ট্র যখন কোনো দেশের সরকারকে পছন্দ না করে, বা তার ইচ্ছা অনুযায়ী সরকার পরিবর্তন করতে চায়, তখন তাদের ওপর বিভিন্ন দোষারোপ করে: মেনন

র‌্যাব ও বাহিনীটির কয়েকজন কর্মকর্তা এবং সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদকে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সরকারকে সতর্ক করেছে ক্ষমতাসীন দলের জোটসঙ্গী ১৪ দলের শরিকরা।

নেতারা বিশ্বের পরাশক্তি এই দেশটির পদক্ষেপকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের হস্তক্ষেপের ইচ্ছা হিসেবে দেখছেন। বলেছেন, বিষয়টি মাথায় রেখেই পদক্ষেপ নিতে হবে।

সোমবার এক ভার্চুয়াল আলোচনায় জোট নেতাদের বক্তব্যে এসব বিষয় উঠে এসেছে।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের বাহিনী হিসেবে পুলিশের বিশেষায়িত সংস্থা র‌্যাব এবং বাহিনীটির বর্তমান ও সাবেক সাতজনের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এদের একজন পুলিশপ্রধান বেনজীর আহমেদ।

এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলারকে তলব করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বাতিল হয়েছে বলে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যখন কোনো দেশের সরকারকে পছন্দ না করে, বা তার ইচ্ছা অনুযায়ী সরকার পরিবর্তন করতে চায়, তখন তাদের ওপর বিভিন্ন দোষারোপ করে।’

তিনি বলেন, ‘ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র কিছুটা হলেও বিশ্ব নেতৃত্ব থেকে পিছিয়ে গেছে। বাইডেন কিন্তু ঘোষণাই দিয়েছেন, তিনি বিশ্ব নেতৃত্বে ফিরতে চান। এ জন্য বিভিন্ন দেশকে তাদের বলয়ভুক্ত করার চেষ্টা চলছে। এ অঞ্চলেও তারা প্রভাববলয় সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। গণতন্ত্রের সম্মেলনে দাওয়াত না দিয়ে সেই ভূরাজনীতি কাজ করেছে।’

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দীলিপ বড়ুয়া বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যখন ব্ল্যাকমেইল করতে চায়, তখন তারা এভাবে অগ্রসর হয়। এভাবে বিভিন্ন সংকট সৃষ্টি করে সরকার পরিবর্তনের দিকে নিয়ে যায়। আজকে এটা কিন্তু সেসবের পূর্ব লক্ষণ। তারা সরকারকে পরিবর্তন করতে চায়।’

‘তবে এভাবে ব্ল্যাকমেইল করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাবু করা যাবে না। উনি যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন, তা মোকবিলা করে সামনে এগিয়ে যান।’

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশের ভেতরে যেসব রাজনৈতিক দল ও মহল হঠাৎ উচ্ছ্বসিত হয়ে ক্ষমতার স্বপ্ন দেখছেন, তাদের স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে। বিদেশের কোন রাষ্ট্র কী বলল, সেটি দেখে বাংলাদেশের ক্ষমতার হিসাব-নিকাশ যারা করেন, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।’

‘অসাংবিধানিক পর্যায়ে সরকার গঠনের কোনো সুযোগ বাংলাদেশে নেই’- এ বিষয়টিও স্মরণ করিয়ে দেন সাবেক মন্ত্রী।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ১৪ দলের ভার্চুয়াল আলোচনায় বক্তারা

যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে দাওয়াত না দেয়া নিয়ে মনোপীড়ায় না ভোগার পরামর্শও দেন ইনু। বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত নয়। তাই যুক্তরাষ্ট্রের কোনো আলোচনায় দাওয়াত পেলাম কী পেলাম না, সেই মাপকাঠিতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থান বিচার করা উচিত নয়।’

তিনি বলেন, ‘ভূরাজনীতির হিসাব-নিকাশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অনুযায়ী বাংলাদেশ তার স্বকীয়তা থেকে সরে আসবে না এবং সব ধরনের জোটের বাইরে অবস্থান করেই তার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে।

‘সুতরাং আমার কাছে মনে হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা ও গণতন্ত্র সম্মেলনে আমন্ত্রণ না জানানোর ঘটনাটা তাদের ভূরাজনীতির হিসাব-নিকাশে পরিচালিত করা হয়েছে, যা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’

তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যাান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী বলেন, ‘সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে টার্গেট করা হয়েছে, এটা মাথায় রাখতে হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত, অনভিপ্রেত’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য অসম্মানজনক। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কিছু করার দরকার ছিল। আমেরিকার অ্যাম্বাসেডরকে ডেকে কৈফিয়ত চাইলাম, এটা কিছু না। যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তারা অন্যায় করেছে। তারা ব্যাখ্যা চাইতে পারত। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লিখতে পারত।’

জোটের সমন্বয়ক ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ‘আজকে বঙ্গোপসাগর নিয়ে যে বলয় সৃষ্টি হয়েছে, সেই বলয়ে আমাদের দেশ অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার কারণেই চাপ প্রয়োগ হচ্ছে বলে আমরা মনে করি। এটি অত্যন্ত ভুল সিদ্ধান্ত। এটি তাদের জন্যই একটি অসম্মানজনক সিদ্ধান্ত বলে পরিগণিত হবে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তের পেছনে তৃতীয় কোনো শক্তির হাত আছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখতেও বলেন আমু। বলেন, ‘আমাদের সম্পর্কের মধ্যেই ফাটল ধরানো বা এই ধরনের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে এই দেশের জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করার কোনো প্রয়াস আছে কি না বা তাদের উৎসাহিত করা হচ্ছে কি না? যে বাহিনী নারী পাচার রোধ, মাদক চোরাচালান রোধসহ জঙ্গিবাদ নির্মূলে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখছে, তাদের বিষয়ে কেন এমন সিদ্ধান্ত? এই বিষয়ে তলিয়ে দেখা উচিত। তাদের সিদ্ধান্ত বদলানো উচিত।’

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ‘যখন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে, সেই সময়ে আমেরিকার এই দূরভিসন্ধি অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে। একাত্তরে যারা আমাদের বিজয়কে মেনে নিতে পারেনি, সেই শক্তি শেখ হাসিনার উন্নয়নকে মেনে নিতে পারছে না।’

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস।

এ বিভাগের আরো খবর