স্ত্রী হত্যা মামলায় তিন জেলায় দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড ও এক আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।
কুষ্টিয়া, নড়াইল ও নওগাঁয় সোমবার এসব মামলার রায় হয়।
কুষ্টিয়ার মিরপুরে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পেয়েছন শাহিনুল ইসলাম।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক তাজুল ইসলাম সোমবার দুপুর ১২টার দিকে এ রায় দেন। আসামি সে সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আসামি শাহিনুল মিরপুর উপজেলার নওদা খাড়ারা গ্রামের বাসিন্দা। ছয় বছর আগে চম্পা খাতুনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
পারিবারিক কলহ ও জমি নিয়ে বিরোধের জেরে ২০১৪ সালের ৯ অক্টোবর রাত তিনটার দিকে চম্পার শাড়ি ও ঘরের বেড়ায় আগুন ধরিয়ে দেন শাহিনুল। সে সময় চম্পা ছিলেন ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
আগুনে তার শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে যায়। শাহিনুলই তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখান থেকে পাঠানো হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে।
সেখানে চম্পার মৃত্যু হয়। পরে তার চাচা শাহাদাত আলী মিরপুর থানায় শাহিনুলের নামে মামলা করেন।
নড়াইলে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে ফাঁসির সাজা পেয়েছেন গাউচ মিনা। সেইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকার অর্থদণ্ডও দেয়া হয়েছে।
জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সানা মোহাম্মদ মাহরুফ হোসাইন সোমবার বিকেলে এ রায় দেন।
মামলায় আরেক আসামি সাহেদা বেগমকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত আইনজীবী নুর মোহাম্মদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছন।
আসামি গাউচের বাড়ি নড়াইলের নড়াগাতি থানার খাষিয়াল গ্রামে। ২০১১ সালে তার বিয়ে হয় সনিয়া বেগমের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই সনিয়াকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করতেন তিনি।
বিয়ের মাত্র এক মাস পর সে বছরের ১৭ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে মারধরের পর সনিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন গাউচ। মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয় ঘরের আঁড়ার সঙ্গে।
পরদিন গাউচের নামে নড়াগাদি থানায় মামলা করেন সনিয়ার ভাই টুটুল বিশ্বাস। ১৬ জনের স্বাক্ষ্য শেষে আদালত এই রায় দেন।
নওগাঁর মহাদেবপুরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে নাসির উদ্দীন নান্নুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে তার ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
নওগাঁর অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক এবিএম গোলাম রসুল সোমবার দুপুরে এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি নাসির উদ্দীন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নাসিরের বাড়ি মহাদেবপুর উপজেলার কাশিবাড়ী কৃষ্ণপুর গ্রামে।
রাষ্ট্রপক্ষের সহকারি কৌঁসুলি সঞ্জীব সরকার রায়ের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রায় ১৪ বছর আগে নাসির উদ্দীন সঙ্গে স্বরসতীপুর গ্রামের পারুল আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের একটি মেয়েও আছে।
এরপর নাসির গোপনে আরেকটি বিয়ে করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে পারুলের সঙ্গে তার কলহ শুরু হয়। এর জেরে ২০১৮ সালের ১২ জুন রাতে ঘাড় মটকিয়ে ও বালিশচাপা দিয়ে পারুলকে হত্যা করেন নাসির।
এ ঘটনায় পারুলের মামা আবুল কালাম আজাদ নাসিরের নামে মহাদেবপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। গ্রেপ্তারের পর আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেন নাসির। ১৪ জনের সাক্ষ্য শেষে আদালত নাসিরকে যাবজ্জীবন সাজার রায় দেয়।